গতকাল শুক্রবার (২১ জুলাই) রাশিয়ার প্রতিনিধি জানান, তাদের নিজস্ব খাদ্য ও সার রফতানির জন্য আরো ভালো শর্ত দেয়া হলে মস্কো প্রকল্পটি পুনরায় চালু করার বিষয়ে বিবেচনা করতে পারে। তবে পশ্চিমা কূটনীতিকরা বলছেন, রাশিয়া দরিদ্রদের জিম্মি করে সুবিধা নিতে চাইছে।
জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ বিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস জানান, গত ১৭ জুলাই শেষ হওয়া শস্য চুক্তিতে ইউক্রেনের বন্দর থেকে ৪৫টি দেশে এক হাজারেরও বেশি জাহাজ তিন কোটি ৩০ লাখ টন শস্য রফতানির অনুমতি পেয়েছিল।
চুক্তিটি গড় শস্যের দাম ২৩ শতাংশি কমিয়ে এনেছিল বলে উল্লেখ করেন গ্রিফিথস। কিন্তু চুক্তি ভেস্তে যাওয়ার পরপরই পরিস্থিতি আবার গুরুতর হতে শুরু হয়েছে। তিনি জানান, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রায় আক্রমণ শুরু হওয়ার পর গত ১৯ জুলাই গমের দাম সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
গ্রিফিথস বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র ও দুর্বল মানুষেরা ইউক্রেনের গমের ওপর নির্ভরশীল। এর জন্য তাদের মূল্য দিতে হবে।
তিনি বলেন, এই ৩৬ কোটি ২০ লাখ মানুষের অনেকের ভবিষ্যৎ এবং তাদের সন্তান ও তাদের পরিবারের ভবিষ্যতের জন্য হুমকির বিষয়। এই সিদ্ধান্তের ফলে অনেকের মৃত্যু হতে পারে।
নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে পশ্চিমা রাষ্ট্রদূতরা অভিযোগ করেন, কৃষ্ণ সাগর চুক্তি নবায়ন না হওয়ায় রাশিয়ার ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছেন। তারা বেশি দামে আগের চেয়ে বেশি শস্য রফতানি করছেন।
মার্কিন রাষ্ট্রদূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড বলেন, রাশিয়া ব্ল্যাকমেইল করার জন্য কৃষ্ণ সাগরকে ব্যবহার করছে। মানবতাকে জিম্মি করে তারা রাজনৈতিক খেলা খেলছে।
ফরাসি রাষ্ট্রদূত নিকোলাস ডি রিভিয়ের বলেছেন, মস্কো কৃষ্ণ সাগর চুক্তি বন্ধ করে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অর্থায়নের জন্য আয় বাড়াচ্ছে।
অন্যদিকে রুশ প্রতিনিধি দিমিত্রি পলিয়ানস্কি বলেন, ইউক্রেনের শস্য রফতানির মাত্র একটি ছোট শতাংশ দরিদ্র দেশগুলোতে গেছে। এই প্রকল্প স্পষ্টভাবে বাণিজ্যিক হয়ে উঠেছে।
জিম্মি করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, রুশ শস্য ও সার রফতানির ওপর প্রভাব ফেলে এমন আর্থিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়া হলে কৃষ্ণ সাগর চুক্তি পুনরায় বিবেচনা করতে প্রস্তুত মস্কো।