জাপানি সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়া শুক্রবার এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
এতে বলা হয়, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহের প্রতিবেশী ভারতে সফরকালে দুই দেশের শীর্ষ নেতারা এই ঘোষণা দেন। গত বৃহস্পতিবার দুই দিনের সফরে ভারত এসেছিলেন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, শক্তিশালী, নিরাপদ ও উন্নত শ্রীলঙ্কা শুধু ভারতের জন্যই সুবিধাজনক নয়, এটি পুরো ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য সুবিধা বয়ে আনবে।
গত বছর অর্থনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত শ্রীলঙ্কাকে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলারের জরুরি সহায়তা দিয়েছে ভারত।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের জানান, তিনি ও প্রধানমন্ত্রী মোদি দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে ‘যৌথ উদ্যোগের’ বিষয়ে রাজি হয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি, ভারতের দক্ষিণাঞ্চল থেকে শ্রীলঙ্কা পর্যন্ত পেট্রোলিয়াম পাইপলাইন তৈরি করা গেলে শ্রীলঙ্কার জ্বালানি সংকট কাটানো যাবে।
প্রস্তাবিত পাইপলাইনের বিষয়ে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ছাড়া সেতু তৈরির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০০২ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে রনিল বিক্রমসিংহে ভারতের দক্ষিণাঞ্চল থেকে পক প্রণালী হয়ে ২৩ কিলোমিটার সেতু নির্মাণের ধারণাটি প্রচার করেন। তবে প্রকল্পটির কোনো অগ্রগতি হয়নি।
খবরে আরও বলা হয়, অবকাঠমোখাতে প্রতিদ্বন্দ্বী চীনকে টেক্কা দিতে ভারত এই প্রকল্পে এখন আগ্রহ দেখাচ্ছে।
তবে পরিবেশবাদীরা সবসময়ই এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে আসছেন। তাদের অভিযোগ পক প্রণালীতে সেতু নির্মাণ করা হলে সেখানকার ছোটছোট প্রবাল দ্বীপগুলো বিলীন হয়ে যাবে। এমনিতেই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ওই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য হুমকিতে আছে।
সংবাদ সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদি বলেন, অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব বাড়াতে আজ আমরা একটি বিষয়ে একমত হয়েছি। তা হলো— শ্রীলঙ্কার সঙ্গে জল, স্থল ও আকাশ পথে যোগাযোগ বাড়ানো। এর মাধ্যমে ২ দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানো যাবে। শ্রীলঙ্কার কাছে আমাদের অঙ্গীকারের বাস্তবায়ন হবে।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের সফরকে ঘিরে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় ক্বাত্রা সাংবাদিকদের জানান, অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতে উভয়দেশের নেতারা বেশ কিছু বিষয় চূড়ান্ত করেছেন।
দুই দেশের মধ্যে সেতু তৈরির বিষয়ে তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট এ বিষয়ে প্রস্তাব দিয়েছেন। দুই নেতাই এ বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে একমত হয়েছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, শ্রীলঙ্কা ইতোমধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে ভারতীয় রুপির মাধ্যমে লেনদেন শুরু করেছে।