আদানি গ্রুপের প্রথম বিল ১৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ

আদানি গ্রুপের প্রথম বিল ১৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ
আদানি পাওয়ারের গড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে কয়েক মাস ধরে অব্যাহতভাবে বিদ্যুৎ আনছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। যদিও বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য এখনো কোনো বিল পায়নি ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটি। তবে প্রথম বিল হিসেবে গত সপ্তাহে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিকে জ্বালানি ব্যয় বাবদ ১৭ মিলিয়ন বা ১ কোটি ৭০ লাখ ডলার পরিশোধ করেছে বিপিডিবি। আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান গৌতম আদানির বাংলাদেশ সফরের দুই সপ্তাহ না যেতেই এ বিল পেল আদানি পাওয়ার।

বিপিডিবির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে জানান, আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট (৮০০ মেগাওয়াট) পরীক্ষামূলক উৎপাদনে থাকা অবস্থায় জ্বালানি বাবদ যে ব্যয় হয়েছিল, সেই বিল পরিশোধ করা হয়েছে। এটি মূলত মার্চে বিপিডিবিতে জমা দেয়া প্রতিষ্ঠানটির প্রথম বিল। দুই কিস্তিতে বিলটি পরিশোধ করা হয়েছে। প্রথম কিস্তিতে ২৫ জুলাই ১০ মিলিয়ন ও ২৬ জুলাই ৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে বিপিডিবি।

বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিপিডিবিতে মোট চারটি বিল জমা দিয়েছে আদানি পাওয়ার। এর প্রথম বিলটি ছিল ১৭ মিলিয়ন ডলারের জ্বালানি বিল। বাকি তিনটি বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ। এ তিন বিলে বিপিডিবির কাছে আদানির বকেয়ার পরিমাণ ২০০ মিলিয়ন বা ২০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে।

ভারতের ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় আদানি গ্রুপ ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছে। গত ৯ মার্চ কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট পরীক্ষামূলক উৎপাদনে যায়। এরপর ৭ এপ্রিল কেন্দ্রটির বাণিজ্যিক উৎপাদন ঘোষণা করে ভারতীয় স্টক এক্সচেঞ্জে চিঠি পাঠায় আদানি পাওয়ার। এরপর ২৬ জুন স্টক এক্সচেঞ্জে পাঠানো এক চিঠিতে দ্বিতীয় ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন ঘোষণা করা হয়।

দুটি ইউনিটের বাণিজ্যিক উৎপাদন ঘোষণার পর ১৫ জুলাই ৩ ঘণ্টার ঝটিকা সফরে ঢাকায় আসেন গৌতম আদানি। এ সফরে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও বৈঠক করেন।

বৈঠক শেষে ওইদিনই এক টুইট বার্তায় গৌতম আদানি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল গড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পুরো সক্ষমতায় উৎপাদন বুঝিয়ে দিতে পেরে আমি সম্মানিত। ভারত ও বাংলাদেশের সাহসী সেই দলকে স্যালুট জানাই, যারা করোনা মহামারীর মধ্যেও কাজ শুরু করে মাত্র সাড়ে তিন বছরের রেকর্ড সময়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উৎপাদনে এনেছেন।’

বাণিজ্যিক উৎপাদনে থাকা আদানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুটি ইউনিট থেকে প্রতিদিন দেড় হাজার মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ উৎপাদন হওয়ার কথা। যদিও বিপিডিবি নিচ্ছে বর্তমানে দিনে ৬০০-৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ আমদানি শুরু হলে আদানির বিলের পরিমাণ আরো বাড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আদানি গ্রুপের সঙ্গে ২০১৭ সালে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি করে বিপিডিবি। চুক্তি অনুসারে কেন্দ্রটি থেকে ২৫ বছর বিদ্যুৎ কিনবে বাংলাদেশ। নিয়ম অনুযায়ী কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের সিংক্রোনাইজিং থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক উৎপাদনে (সিওডি) যাওয়ার আগ পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানি ব্যয় বিপিডিবিকে দিতে হচ্ছে। তবে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরুর আগেই এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য আমদানি করা কয়লার যে দাম ধরা হয়েছিল, তা নিয়ে আপত্তি তোলে বিপিডিবি। এ নিয়ে চলতি বছরের শুরুতেই আদানির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা হয়। পরবর্তী সময়ে আদানি পাওয়ারের পক্ষ থেকে বিপিডিবিকে জানানো হয়, পায়রা ও রামপাল কেন্দ্রের চেয়ে তাদের বিদ্যুতের দাম কম হবে। কয়েক মাসের বিদ্যুৎ সরবরাহেও দেখা গেছে, বাংলাদেশে আদানি যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে, তা স্থানীয় বৃহৎ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চেয়ে ইউনিটপ্রতি দাম কম পড়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বকেয়া বিল পরিশোধে তৎপর হয়েছে সরকার। প্রতি সপ্তাহে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বকেয়া, এলএনজি আমদানি, বিদেশী কোম্পানির পাওনা হিসেবে ২৪০ মিলিয়ন ডলার ছাড়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রতি মাসে বিদ্যুৎ খাতের বকেয়া বিল পরিশোধ করা হবে ১ বিলিয়ন ডলারের মতো।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া