দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এ আইনে প্রত্যাশা করা হচ্ছে যে এটি পাস হলে পেশাদার রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীরা, যেমন টাইটেল বীমাকারীরা (আবাসন সুরক্ষা বীমায় বিনিয়োগকারী) নগদ অর্থে আবাসন ক্রেতাদের নাম পরিচয় ট্রেজারির আর্থিক অপরাধ প্রয়োগ নেটওয়ার্কের (ফিনসেন) কাছে জমা দেবে। সংশ্লিষ্ট দুজন ব্যক্তির বরাত দিয়ে রয়টার্স জানিয়েছে, ফিনসেন তার নিয়ন্ত্রক এজেন্ডা অনুসারে চলতি মাসের যেকোনো দিন নতুন নিয়মটি প্রস্তাব করতে পারে। তবে অন্য কোনো কারণে প্রস্তাবের সময়সীমা পরিবর্তনও হতে পারে।
দুর্নীতিবিরোধী আইনজীবী ও আইনপ্রণেতারা নতুন এ আইন পাস করতে চাপ সৃষ্টি করে আসছেন, যা বর্তমান প্যাচওয়ার্ক রিপোর্টিং সিস্টেমকে প্রতিস্থাপন করবে। কয়েক দশক ধরে অপরাধীরা বেনামে অর্জিত সম্পদ রিয়েল এস্টেট খাতে বিনিয়োগের নামে লুকিয়ে রেখে আসছে উল্লেখ করে ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন গত মার্চে বলেছিলেন, ‘২০১৫-২০ সালের মধ্যে মার্কিন রিয়েল এস্টেটে ২৩০ কোটি মার্কিন ডলার পাচার করা হয়েছে।’
এ খাত ব্যবহার করে অর্থ পাচারের মূলোৎপাটনের লক্ষ্যে ফিনসেন আনুষ্ঠানিকভাবে বাড়ির মালিকদের নাম নথি বইতে লিপিবদ্ধ করে রাখার এ গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বলে মনে করেন অ্যাডভোকেসি গ্রুপ দ্য ফ্যাক্ট কোয়ালিশনের সরকারিবিষয়ক পরিচালক এরিকা হ্যানিচাক। তবে কবে নাগাদ নতুন এ আইনের প্রস্তাব করা হতে পারে, সে সম্পর্কে ফিনসেন মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। আইনজীবীদের অনেকে বলছেন, ফিনসেন খুবই ধীরে এগোচ্ছে। ২০২১ সালে কর্মকর্তারা প্রথমবারের মতো বলেছিলেন, তারা নিয়মটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করেছেন।
একটি সূত্র জানিয়েছে, ফিনসেন আইনটির সঙ্গে এমন একটি ধারা প্রস্তাব করতে চায়, যা দিয়ে শেল কোম্পানির মালিকদের মুখোশ উন্মোচন করা যাবে। গত এপ্রিলে আইনপ্রণেতাদের একটি দ্বিদলীয় গোষ্ঠী এক খোলা চিঠিতে ফিনসেনকে প্রস্তাবটি পাকাপোক্ত করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিল। এ বিতর্ক রিয়েল এস্টেট খাতের আলোচিত আইনটি নিয়ে ফিনসেনের কাজকে মন্থর করে দিয়েছে।
টাইটেল বীমাকারীদের সংগঠন আমেরিকান ল্যান্ড টাইটেল অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, তারা নতুন নিয়মকে স্বাগত জানায়। তবে আবাসন আইনটি পাস করার ক্ষেত্রে ফিনসেনকে শেল কোম্পানিসংক্রান্ত নিয়মকানুন চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত।
প্রস্তাবিত নিয়মটি জনসাধারণ ও শিল্পসংশ্লিষ্টদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাংকগুলো ক্রেতার অর্থের উৎস ও সন্দেহজনক লেনদেন চিহ্নিত করা প্রয়োজন হলেও আবাসন খাতের বেলায় বিদ্যমান আইনে এ ক্ষেত্রে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়ার বিধি নেই। পরবর্তী সময়ে নিউইয়র্ক, মিয়ামি ও লস অ্যাঞ্জেলেসসহ কয়েকটি শহরে ফিনসেন রিয়েল এস্টেট ক্রয়-বিক্রয় তথ্য প্রকাশের নিয়ম বাধ্যতামূলক করেছে, যা জিওগ্র্যাফিক টার্গেটিং অর্ডার (জিটিও) নামে পরিচিত।
ফিনসেন ২০১৬ সালে জিটিও কার্যকর করার পর এক প্রতিবেদনে নিউইয়র্ক টাইমস প্রকাশ করেছিল, বিলাসবহুল রিয়েল এস্টেটের প্রায় অর্ধেকই কিনেছে বেনামি শেল কোম্পানিগুলো।
অর্থসংবাদ/এমআই