অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উদ্যোগের পর আইন সংশোধনের মূল দায়িত্ব এখন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের। বিভাগটি ইতিমধ্যে আইন সংশোধনের খসড়া প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছে। জাতীয় সংসদের আগামী নির্বাচনের আগে এ আইন সংশোধনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
আইন সংশোধনের পর সড়কে বিমা ছাড়া গাড়ি চলাচলে গুনতে হবে অন্তত তিন হাজার টাকা জরিমানা। একই আইনে মামলাও করতে পারবে পুলিশ। যান চলাচলে আগেও বিমা করা বাধ্যতামূলক ছিল। ২০১৮ সালে সড়ক পরিবহন আইন করে তা তুলে দেওয়া হয়।
এর আগে গত ১ মার্চ অনুষ্ঠিত জাতীয় বিমা দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিমা ছাড়া যানবাহন চলাচল করতে না পারার বিষয়ে নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে দেখব যে যথাযথ বিমা ছাড়া সড়কে কোনো যানবাহন যেন না চলে।’ প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যকেই আইন সংশোধনের ভিত্তি হিসেবে নেয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এ–সংক্রান্ত আইন সংশোধনের প্রস্তাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি সারসংক্ষেপ পাঠালে প্রধানমন্ত্রী তাতে হুবহু অনুমোদন দেন। ওই সারসংক্ষেপে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮–এর ধারা সংশোধনের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলা হয়, বিশ্বের কোনো দেশই বিমা ছাড়া সড়কে কোনো যানবাহন চলতে দেয় না।
যে ধারাগুলো বদলাচ্ছে
বিদ্যমান সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮–এর ৬০ ধারার অধীন যাত্রী বা মোটরযানের বিমা নিয়ে চারটি উপধারা আছে। আইন সংশোধন করে এখন এগুলো স্পষ্ট করা হবে বলে জানা গেছে।
একটি উপধারায় বলা আছে, কোনো মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান ইচ্ছা করলে তার মালিকানাধীন যেকোনো মোটরযানের জন্য যে সংখ্যক যাত্রী পরিবহনের জন্য নির্দিষ্টকৃত, তাদের জীবন ও সম্পদের বিমা করতে পারবে।
আরেক উপধারায় বলা আছে, মোটরযানের মালিক বা প্রতিষ্ঠান তার অধীন পরিচালিত মোটরযানের জন্য যথানিয়মে বিমা করবে। মোটরযানের ক্ষতি বা নষ্ট হওয়ার বিষয়টি বিমার আওতাভুক্ত থাকবে এবং বিমাকারীর মাধ্যমে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অধিকারী হবে।
আরেক উপধারায় বলা আছে, মোটরযান দুর্ঘটনায় পড়লে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা নষ্ট হলে ওই মোটরযানের জন্য আর্থিক সহায়তা তহবিল থেকে কোনো ক্ষতিপূরণ দাবি করা যাবে না।
আবার বলা হয়েছে বিমার শর্ত, বিমার দায়দায়িত্বের সীমা, বিমার দেউলিয়াত্ব, বিমা দাবি পরিশোধ, বিরোধ-নিষ্পত্তি, বিমা সনদের কার্যকারিতা ও তা হস্তান্তর এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় বিধির মাধ্যমে নির্ধারিত হবে।
অর্থসংবাদ/এমআই