তবে এই পরিকল্পনা এখনো প্রকাশ্যে আনেনি জিও, কোম্পানির বিভিন্ন সূত্রে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এই তথ্য প্রকাশ করেছে। ফোনের সঙ্গে রিলায়েন্সের ইন্টারনেট বিক্রি করা হবে। ইন্টারনেট বাজার যেভাবে নিজের দখলে এনেছে, রিলায়েন্স এবার একই কায়দায় স্মার্টফোনের বাজার ধরতে চাইছে। এতে ভারতের স্থানীয় সংযোজনকারী ডিক্সন টেকনোলজিস ইন্ডিয়া, লাভা ইন্টারন্যাশনাল ও কার্বন মোবাইলসের সুদিন ফিরতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত বছর এরা ১৬ কোটি ৫০ লাখ স্মার্টফোন সংযোজন করেছে। সমপরিমাণ বেসিক ফোনও সংযোজন করেছে এরা। পাশাপাশি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যে আত্মনির্ভর ভারতের ডাক দিয়েছেন, তার প্রতি সাড়া দিতেও এই প্রকল্প হাতে নিয়েছেন রিলায়েন্সের কর্ণধার মুকেশ আম্বানি।
গত আগস্ট মাসে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের বার্ষিক সাধারণ সভায় সস্তা স্মার্টফোন বাজারে আনার প্রতিশ্রুতি দেন মুকেশ আম্বানি। বিভিন্ন সূত্রের খবর, সেই পথে তিনি কয়েক ধাপ এগিয়েও গেছেন। ভারতের যেসব কোম্পানি যন্ত্রাংশ জুড়ে মোবাইল ফোন তৈরি (অ্যাসেম্বল) করে, তাদের নাকি ইতিমধ্যে বড় অঙ্কের বরাদ্দ দিয়েছেন তিনি। ইকোনমিক টাইমস ও বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড সূত্রে এ খবর পাওয়া গেছে।
গত মঙ্গলবার জিও বিভিন্ন ধরনের ইন্টারনেট প্যাকেজ বাজারে এনেছে। এর মধ্যে ৩৯৯ রুপির প্যাকেজও আছে। এই প্যাকেজের আওতায় শুধু ডেটাই বিক্রি হচ্ছে না, আমাজন থেকে শুরু করে নেটফ্লিক্স প্রাইমের মতো সেবাও মিলছে।
স্মার্টফোন তৈরির লক্ষ্যে জুলাই মাসে গুগলের সঙ্গে চুক্তি করে রিলায়েন্স। এই চুক্তির আওতায় গুগলের ৪৫০ কোটি বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার কথা। তারা মূলত প্রযুক্তি উন্নয়নে সহায়তা করবে রিলায়েন্সকে। কিন্তু চুক্তিটি এখনো আইনি পর্যালোচনার অধীনে আছে বলে রিলায়েন্স আপাতত একলা পথ চলছে।
বিভিন্ন সূত্রমতে, ভারতের ৩৫ কোটি মানুষ এখনো বেসিক ফোন ব্যবহার করেন, যাঁরা মূলত দ্বিতীয় প্রজন্মের তরঙ্গে আটকা পড়ে আছেন। স্মার্টফোন না থাকায় এই মানুষেরা অনেক সেবা থেকে যেমন বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমনি তাঁদের উৎপাদনশীলতাও বাড়ছে না। সস্তা স্মার্টফোন দিয়ে সেই বাজার ধরতে চাইছেন মুকেশ। অন্যদিকে যখন মোদি সরকার দেশীয় উৎপাদনের ওপর জোর দিয়ে ভারতকে আত্মনির্ভর করার কথা বলছে, তখন জিওর মুকেশের কাছেও তুরুপের তাস হতে পারে সস্তার দেশীয় ৪-জি স্মার্টফোন।
রিলায়েন্সের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতী এয়ারটেলও চতুর্থ প্রজন্মের মোবাইল ফোন তৈরির লক্ষ্যে সংযোজনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করছে বলে জানা গেছে। রিলায়েন্স যেহেতু স্মার্টফোন আউটসোর্স করবে, সেহেতু ভারতী এয়ারটেলও এই উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ঢুকে পড়তে পারে।