মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে শহরের পার-নওগাঁ তাজের মোড় এলাকার শহীদ মিনার চত্বরে নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের ব্যানারে দোয়া মাহফিল ও খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন—পার-নওগাঁ বায়তুল মামুর জামে মসজিদের ইমাম মোয়াজ্জেম হোসেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি জেলার পত্নীতলা উপজেলায়। অপরজন হলেন তাজের মোড় এলাকার রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পৌর আওয়ামী লীগের ব্যানারে শহীদ মিনারে দোয়া মাহফিল ও খাদ্য বিতরণের আয়োজন করা হয়। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর পরিবারবর্গ, শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। মোনাজাতের শেষ মুহূর্তে এসে ইমাম সদ্যপ্রয়াত দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুতে দোয়া চাওয়া শুরু করেন। এ সময় উপস্থিত নেতা-কর্মীরা তাঁকে সাঈদীর জন্য দোয়া চাইতে নিষেধ করেন। পরে নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে পরে, ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান তাঁকে সাঈদীর মৃত্যুতে দোয়া পাঠের জন্য বলেছেন বলে জানান ইমাম।
জানা গেছে, এই ঘটনার কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে মোয়াজ্জেম হোসেন ও হাফিজুর রহমানকে থানায় নিয়ে যায়। এ বিষয়ে নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহম্মেদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে নওগাঁ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম বলেন, ‘ওই অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম না। তবে শুনেছি তাজের মোড়ে শোক দিবসের অনুষ্ঠানে দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর জন্য চেয়েছেন এক ইমাম। পরে ওই ইমাম নাকি ক্ষমাও চেয়েছেন। পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা ভাইস চেয়ার ইলিয়াস রেজা তুহিন বলেন, ‘মোনাজাত চলাকালীন হঠাৎ ওই ইমাম আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুতে দোয়া করেন। তাৎক্ষণিক ওই ইমামের এমন কাণ্ড দেখে নেতা-কর্মীরা হতাশ হয়ে পড়েন। এ সময় সকলের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘সারা দিন শোক দিবসে আমরা অনেকগুলো প্রোগ্রাম করেছি। এই একটি ঘটনায় আমরা বিব্রত।’
পার-নওগাঁ বায়তুল মামুর জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক রতন হাজি বলেন, ‘শোক দিবসের অনুষ্ঠানে সদ্যপ্রয়াত দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর মৃত্যুতে দোয়া করেছেন ইমাম। ওই ঘটনার পরে পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে গেছে। কী মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে আজ (বুধবার) দুপুর পর্যন্ত এ বিষয়ে আমরা কিছু জানতে পারিনি।’
নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান বলেন, ‘পূর্বের একটি বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় সন্ধ্যায় তাদের থানায় নিয়ে আসা হয়। মামলার বাদী পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে ওই মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।’