পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিললো ৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা

পাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিললো ৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা
কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের আটটি দানবাক্স থেকে পাওয়া গেছে ২৩ বস্তা টাকা। তিন মাস ১৩ দিন পর শনিবার (১৯ আগস্ট) মসজিদের দানবাক্স খোলা হয়। দিনভর গুনে ২৩টি বস্তা থেকে পাওয়া গেছে পাঁচ কোটি ৭৮ লাখ ৯ হাজার ৩২৫ টাকা। যা যাবত কালের সর্বোচ্চ। এছাড়াও দানবাক্স থেকে স্বর্ণ ও বিদেশি মুদ্রাও পাওয়া গেছে।

শনিবার সকাল থেকে ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ দুই শতাধিক লোক দিনব্যাপী গণনা শেষে রাত ১০টার দিকে মসজিদ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ তথ্য জানান।

এর আগে গত ছয় মে দানবাক্স খুলে পাওয়া গিয়েছিল পাঁচ কোটি ৫৯ লাখ সাত হাজার ৬৮৯ টাকাসহ স্বর্ণালঙ্কার ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা। এবার আরও ১৯ লাখ এক হাজার ৬৩৬ টাকা বেশি পাওয়া গেছে।

পাগলা মসজিদের এ টাকা দিয়ে শতকোটি টাকা ব্যয়ে দৃষ্টিনন্দন মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও হত দরিদ্রদের জটিল রোগের চিকিৎসায় অনুদান দেয়া হয়ে থাকে বলে জানা গেছে।

শনিবার সকালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে পাগলা মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়। দানবাক্সের টাকাগুলো ২৩টি বস্তায় ভরে মসজিদের দোতলায় নিয়ে গণনার কাজ শুরু হয়। টাকা গণনার কাজে রূপালী ব্যাংকের ৬০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী, মসজিদের এতিমখানা ও মাদ্রাসার শিক্ষক-ছাত্রসহ দুই শতাধিক লোক অংশ নেন। রাত ১০ টার দিকে গণনার কাজ শেষ হয়। পরে টাকাগুলো কঠোর নিরাপত্তায় রূপালী ব্যাংকে জমা রাখা হয়।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ জানান, তিনি সকাল থেকেই নিজে উপস্থিত থেকে টাকা গণনার কাজ পর্যবেক্ষণ করছেন। টাকা গণনা শেষে ব্যাংক পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পর্যাপ্ত পুলিশ ও আনসার সদস্য দায়িত্বে ছিলেন।

জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ জানান, পাগলা মসজিদকে ঘিরে দেশ-বিদেশের মানুষের অনুভূতি কাজ করে। এ টাকা দিয়ে শত কোটি টাকার একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নির্মাণ করা হবে। অন্তত ৩০ হাজার মানুষ যাতে এক সঙ্গে নামাজ পড়তে পারে এমন একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ নির্মাণের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে হারুয়া এলাকায় পাগলা মসজিদের অবস্থান। সুউচ্চ মিনার ও তিন গম্বুজ বিশিষ্ট তিনতলা পাগলা মসজিদটি কিশোরগঞ্জের অন্যতম ঐতিহাসিক স্থাপনা। মসজিদকে ঘিরে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। এ মসজিদে দান করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়- এ বিশ্বাস থেকেই পাগলা মসজিদে দেশ-বিদেশের নানা ধর্ম ও বর্ণের মানুষ টাকা পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার ও বৈদেশিক মুদ্রা দান করে থাকেন। অনেকে রাতে গোপনে এসে এ মসজিদে দান করেন।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় পাঁচশ বছর আগে বাংলার বারো ভূঁইয়ার অন্যতম ঈশা খানের আমলে দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিলকদর পাগলা নরসুন্দা নদীর তীরে বসে নামাজ আদায় করতেন। তিনি মারা গেলে পরবর্তীতে তার ভক্তরা সেখানে মসজিদটি নির্মাণ করেন। জিলকদর পাগলার নামানুসারেই মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ হিসেবে পরিচিতি পায়।


আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেঁয়াজের দামে শঙ্কায় কৃষক, ক্ষুব্ধ ক্রেতা
ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরি বন্ধ
তিনদিন সেন্টমার্টিনের হোটেল-মোটেল বন্ধ
চিটাগাং সিনিয়রস ক্লাবের নতুন প্রেসিডেন্ট বাবলু
স্থলবন্দর এলাকায় মর্টারশেল, ধ্বংস করলো সেনাবাহিনী
রংপুরের তারাগঞ্জ সভাস্থলে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় ফেরি চলাচল শুরু
ময়মনসিংহে মালবাহী ট্রাকে ট্রেনের ধাক্কা, নিহত ৪
এক জালে ১৫৯ পোপা মাছ, দাম হাঁকছেন ২ কোটি
রেললাইনের ক্লিপ খুলে নিলো দুর্বৃত্তরা, অল্পের জন্য রক্ষা