এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল রেটিংস বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে ঋণ দেওয়া-নেওয়া ‘কঠিন’ হয়ে পড়ার কারণে পাঁচটি ব্যাংকের ঋণমান অবনমন করা হয়েছে।
ব্যাংকগুলো হলো কি করপোরেশন, কোমারিকা ইনকরপোরেশন, ভ্যালি ন্যাশনাল ব্যানকর্প, ইউএমবি ফাইন্যান্সিয়াল করপোরেশন ও অ্যাসোসিয়েটেড ব্যাংক-কর্প।
চলতি মাসেই মুডিস যুক্তরাষ্ট্রের ১০টি ব্যাংকের ঋণমান এক ধাপ কমায়। এর বাইরে ছয়টি বড় মার্কিন ব্যাংকের ঋণমান পর্যালোচনা করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথাও জানায় মুডিস। এসব ব্যাংকের মধ্যে রয়েছে ব্যাংক অব নিউইয়র্ক মেলন, ইউএস ব্যানকরপ, স্টেট স্ট্রিট ও ট্রুইস্ট ফাইন্যান্সিয়াল। দেশটির বড় এই ব্যাংকগুলোর ঋণমান কমিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে সতর্কও করে মুডিস।
চলতি বছরে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে চারটি ব্যাংক ধসে পড়েছে, যে ধারা শুরু হয় সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের পতনের মধ্য দিয়ে। এই পরিস্থিতিতে গ্রাহকেরা যেন অর্থ তুলে না নেন, তা নিশ্চিত করতে দেশটির অনেক আঞ্চলিক ব্যাংক আমানতের সুদহার বাড়িয়েছে। এতে তাদের মুনাফায় প্রভাব পড়েছে। সুদহার বাড়ানোর পরও অনেক আঞ্চলিক ব্যাংক গ্রাহকদের অর্থ তুলে নেওয়ার প্রবণতা রুখতে পারেনি।
কোমারিকা ব্যাংকের ঋণমান অবনমনের কারণ হিসেবে এসঅ্যান্ডপি আমানত হ্রাসের উদাহরণ দিয়েছে। তারা বলেছে, গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় এই ব্যাংকের আমানত কমেছে ১৪ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার। এ ছাড়া ব্যাংকটিতে বাণিজ্যিক ও বিমাবিহীন আমানতের অনুপাত বেশি—এই বিষয়টিকেও তারা ঋণমান অবনমনের আরেকটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে।
অন্য চারটি ব্যাংকের বাস্তবতাও একই রকম—এমন কথাই বলছে এসঅ্যান্ডপি।
এসঅ্যান্ডপি আরও জানিয়েছে, যেসব ব্যাংকের পর্যালোচনা করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ৯০ শতাংশ সম্পর্কে স্থিতিশীলতার আভাস দেওয়া হয়েছে। বাকি ১০ শতাংশ ব্যাংক সম্পর্কে নেতিবাচক আভাস দেওয়া হয়েছে।
এদিকে আরেক বড় ঋণমান নির্ধারণকারী সংস্থা ‘ফিচ’ মাত্র কয়েক দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রের ঋণমান এক ধাপ কমিয়ে ‘এএ+’ নির্ধারণ করেছে। মূলত জাতীয় ঋণসীমা স্থগিত নিয়ে দেশটিতে যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়, তার জেরে ফিচ দেশটির ঋণমান কমিয়ে দেয়। বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের জন্য অসম্মানজনক বলেই মনে করেন বিশ্লেষকেরা।
চলতি মাসে ফেডারেল রিজার্ভের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ভোক্তাদের ঋণের চাহিদা কমেছে, অথচ এ পরিস্থিতিতেও ঋণ দেওয়ার বেলায় ব্যাংকের কড়াকড়ি বেড়েছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় ফেডারেল রিজার্ভ যেভাবে গত বছর থেকে নীতি সুদহার বাড়াচ্ছে, তাতে ঋণের চাহিদা বাড়বে না বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। ফলে আপাতত দেশটিতে ব্যাংক খাতের পরিস্থিতির উন্নতি হবে না বলেই ধারণা করছেন বিশ্লেষকেরা।