ভারতের বিকল্প রপ্তানিকারক হিসেবে সাতটি দেশ থেকে সাড়ে ১৭ হাজার টন পেঁয়াজ আসছে দেশে। এর মধ্যে পেঁয়াজ আমদানির প্রক্রিয়া শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। দেশগুলো হচ্ছে চীন, পাকিস্তান, মিসর, তুরস্ক, কাতার, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ড।
গত মঙ্গলবার ও গতকাল বুধবার এই দুই দিনে উল্লিখিত পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্র বা আইপি অনুমোদন নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সপ্তাহ ঘুরতেই আবেদন লাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আমদানিকারকরা গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ভারতের বিকল্প হিসেবে সাত দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পেয়েছেন প্রায় ১৭ হাজার ৬০০ টনের। এর মধ্যে গতকাল এক দিনেই অনুমতি পেয়েছেন ১২ হাজার টনের। সবচেয়ে বেশি ১০ হাজার টন পেঁয়াজ আসছে পাকিস্তান থেকে।
মিসর থেকে আসছে চার হাজার টন, চীন থেকে দুই হাজার টন, তুরস্ক থেকে এক হাজার ১০০ টন। অন্য দেশগুলো থেকে আসবে বাকি পেঁয়াজ।
কৃষি বিভাগের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘বাজারে দাম আরো বাড়তে পারে— এমন আশঙ্কা করতে পেরে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন বিকল্প দেশ থেকে দ্রুত আমদানির অনুমতি নিচ্ছেন। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আরো নতুন দেশ যেমন আমদানির তালিকায় যুক্ত হবে, তেমনি আমদানির অনুমতিও অনেক বেড়ে যাবে।
আমরাও মনে করি, বিকল্প দেশের পেঁয়াজ থাকলে বাজারে প্রতিযোগিতা থাকবে। দাম ইচ্ছামতো বাড়ানোর সুযোগ থাকবে না। ভোক্তা কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবে।’ ভারত থেকে সাড়ে ১৩ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি নিয়েছেন দেশের ব্যবসায়ীরা। এর বিপরীতে দেশে এসেছে তিন লাখ ৭৫ হাজার টন। বাকি পেঁয়াজ আসার পথে।
ভারত সরকার শুল্কহার ৪০ শতাংশ বাড়িয়ে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমতি দেওয়ায় আমদানি কিছুটা ধীর হয়েছে। এই শুল্কহারে কেজিতে শুল্ক বাড়বে সাড়ে ছয় টাকা, কিন্তু দেশের বাজারে আমদানি করা পেঁয়াজের কেজিতে দাম বেড়েছে প্রায় ২০ টাকা।
সাত দেশ থেকে পেঁয়াজগুলো কনটেইনার জাহাজে আসবে। ভিড়বে চট্টগ্রাম বন্দরেই। সেখান থেকে পাইকারি বাজার হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছবে। এসব পেঁয়াজ দেশে আসতে ১৫ দিন লাগতে পারে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ফল আমদানিকারক জিএস ট্রেডিংয়ের মালিক নাজিম উদ্দিন বলেন, মিয়ানমার থেকে সবচেয়ে কম সময়, সাত দিন লাগবে। চীনের শেনজেন বন্দর থেকে জাহাজীকরণ হলে আসতে সময় লাগবে ১০ থেকে ১২ দিন, থাইল্যান্ড থেকে আসতে ১৪ দিন, পাকিস্তান থেকে আসতে ২০ থেকে ২২ দিন, মিসর ও তুরস্ক থেকে আসতে লাগবে ৩০ দিন। জাহাজীকরণ হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছতে এই সময় লাগবে।
পেঁয়াজ আমদানিকারকরা বলছেন, অনেক সময় বিদেশি সরবরাহকারীর সঙ্গে দেশের আমদানিকারকদের ভালো বোঝাপড়া থাকলে ঋণপত্র খোলার আগেও পেঁয়াজ জাহাজীকরণ করা হয়। এতে আরো কম সময়ে পেঁয়াজ দেশে এসে পৌঁছে। এসব পেঁয়াজ এলে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
ভারত শুল্কহার বাড়ানোর পর রাতারাতি দেশের পাইকারি ও খুচরা বাজারে দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতা শুরু হয়। গতকাল খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারের আড়তে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬২ টাকা দরে। অথচ গত বৃহস্পতিবার বিক্রি হয়েছিল ৪৫ টাকা দরে।
অর্থসংবাদ/এসএম