৫৪ দিনে রিজার্ভ থেকে ১৯৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার বিক্রি

৫৪ দিনে রিজার্ভ থেকে ১৯৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার বিক্রি

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের ধাক্কা লেগেছিল বিশ্বব্যাপী। এর ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যার প্রভাব খাদ্যপণ্যসহ সব পণ্যের ওপর পড়ে। চাপে পড়ে বৈশ্বিক অর্থনীতি। দেশের অর্থনীতির অবস্থাও একই। একের পর এক ডলারের বিপরীতে কমতে থাকে টাকার মান। দেখা দেয় ডলার সংকট।


তীব্র ডলার সংকটের মধ্যে হু হু করে দাম বেড়ে যায় পণ্যের। নিত্যপণ্য অনেকটাই ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যায়। এ অবস্থায় জরুরি পণ্য আমদানিতে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ থেকে ডলার ছাড় করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এভাবে ডলার বিক্রি করে বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হয়। যদিও এখনো সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি দেশ।


অন্যদিকে, ডলার বিক্রির ফলে বিদেশি মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ কমছেই। গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৩৫৮ কোটি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর চলতি ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের ২৩ আগস্ট পর্যন্ত মোট ৫৪ দিনে ১৯৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে।


বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, রিজার্ভ থেকে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বিক্রি করা হয় ১১৪ কোটি ৭০ ডলার বা ১১৪৭ মিলিয়ন ডলার। আর অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টের প্রথম ২৩ দিনে বিক্রি করা হয় ৮১ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এর আগে সদ্য বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে সর্বোচ্চ ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করা হয়। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করে হয়েছিল।


ডলার বিক্রি আর আমদানির দায় মেটানোর কারনে কমতে থাকে দেশের রিজার্ভ। গতকাল বুধবার (২৩ আগস্ট) পর্যন্ত আইএমএফ’র হিসাব মতে দেশের খরচ করার মতো রিজার্ভ রয়েছে ২৩ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৩১৬ কোটি ডলার। তবে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব হিসাবমতে রিজার্ভ রয়েছে ২৯ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৯৩২ কোটি ডলার। এর আগে ২০২১ সালের আগস্টে রেকর্ড ৪৮ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছিল রিজার্ভ। পরের বছর ২০২২ সালের ১৬ আগস্ট রিজার্ভ ছিল ৩৯ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার। বর্তমানে ওই রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে।


২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ব্যাংক ১০ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে। এর মধ্যে সরকারকে ঋণ দিয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা লাভ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ছাড়া ডলার বিক্রি করে আয় করেছে ৬ হাজার কোটি টাকা। বাণিজ্যিক ব্যাংকে ঋণ দিয়ে আরও ২ হাজার কোটি টাকা আয় করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সব মিলে সদ্য বিদায়ী অর্থবছর ১৫ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। যার মধ্যে খরচ করেছে ৪ হাজার ২৫২ কোটি টাকা। সেক্ষেত্রে নিট মুনাফা করেছে ১০ হাজার ৭৪৮ কোটি টাকা।


বিদায়ী অর্থবছর সরকার ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ১ লাখ ২২ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা রেকর্ড ঋণ নিয়েছে। যার পুরো অংশই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেওয়া। এর আগের অর্থবছরে ৯৭ হাজার ৬৪৮ কোটি টাকার ঋণ নেয় সরকার। এ দুই খাত থেকেই গত বছর বেশি আয় করে বাংলাদেশ ব্যাংক।


অর্থসংবাদ/এসএম

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

নতুন সুদহার নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহারে ধ্বংস হচ্ছে জুয়েলারি শিল্প
বছর ঘুরলেও প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেনি
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
গ্রাহক সংখ্যায় দেশসেরা প্রতিষ্ঠান নগদ
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
প্রথম দিনেই ২ লাখের বেশি পণ্যের অর্ডার পেলো ইভ্যালি
তিন মাসের মধ্যে সব দেনা পরিশোধ শুরু করবো
পোশাকশিল্পকে রাজনৈতিক হাতিয়ার না বানানোর অনুরোধ
এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম বেড়েছে ৪৪ শতাংশ