গরুর মাংস আমদানি করলে দেশে তা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ। তবে দেশীয় উৎপাদকদের সুরক্ষা দিতে গরুর মাংস আমদানি করা হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
শুক্রবার (২৫ আগস্ট) রাজধানীর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) আয়োজিত এক ছায়া সংসদ বিতর্ক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গরুর মাংসের দাম নিয়ে কথা বলেন বাণিজ্যসচিব। ভোক্তা-অধিকার নিশ্চিতকরণে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনার সুফল বিষয়ে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।
বাণিজ্যসচিব বলেন, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা থেকে গরুর মাংস আমদানি করা গেলে ভোক্তারা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস খেতে পারবেন। এখন হয়তো ৮০০ টাকায় তাদের এই মাংস কিনতে হচ্ছে। কিন্তু এটা (বাড়তি দামের দায়) ভোক্তাদের ওপর দেওয়া হচ্ছে দেশীয় উৎপাদনকারীদের সুরক্ষা ও সহযোগিতা করার জন্য। ডিম, মুরগিসহ অনেক পণ্যের ক্ষেত্রেও একই কথা বলা যায়।
তিনি আরও বলেন, ‘ভোক্তাদের সুবিধা দিতে হলে আমদানিকে উন্মুক্ত করে দেওয়া প্রয়োজন। উন্নত দেশগুলো আমদানিতে কোনো বিধিনিষেধ দেয় না। কিন্তু আমরা বিভিন্ন পণ্যে আমদানিতে অনেক বিধিনিষেধ দিয়ে রেখেছি। কারণ, দেশে প্রচুর মানুষ বেকার। ফলে আমাদের আত্মকর্মসংস্থানে যেতে হবে। এ জন্য তাঁদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে, দেশীয় উৎপাদকদের সুরক্ষা দিতেই এসব বিধিনিষেধ দেওয়া হয়।’
তবে ৩৫০-৪০০ টাকায় আমদানি করা গরুর মাংস বিক্রি করা সম্ভব বলে বাণিজ্যসচিব যে তথ্য দিয়েছেন, তার সঙ্গে একমত নন দেশীয় উৎপাদকেরা। বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক (বিডিএফএ) মোহাম্মদ শাহ এমরান জানান, বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশের তুলনায় ব্রাজিলে গরুর মাংসের দাম বেশি। গ্লোবাল প্রোডাক্ট প্রাইজ নামের একটি ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, আর্জেন্টিনাতেও গরুর মাংসের দাম বাংলাদেশের কাছাকাছি। এমনকি দামের ওপর ভিত্তি করে ওই ওয়েবসাইট যে র্যাঙ্কিং করে, তাতে ৭৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৬৪তম। সেখানে ব্রাজিল ৬২তম ও আর্জেন্টিনা ৭৪তম।
দেশে বর্তমান উৎপাদন খরচ অনুযায়ী বাজারে গরুর মাংসের দাম হওয়া উচিত ৭০০ টাকার মধ্যে, এমন তথ্য দিয়ে মোহাম্মদ শাহ এমরান জানান, দেশের বাজারে গরুর মাংসের তেমন সংকট নেই। তবে গত এক বছরে পশুখাদ্যের দাম বেড়েছে ৪৫ শতাংশ। এ ছাড়া সার্বিক উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও বেশি মাংস উৎপাদনকারী উন্নত প্রজাতির গরু না থাকায় বাজারে গরুর মাংসের দাম কমছে না।