রেমিট্যান্স বা প্রবাসী-প্রেরিত অর্থ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে একটি প্রধান চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে। তাই সরকার কালো বাজার থেকে এটিকে মুক্ত করতে বর্তমানে ১০০ টাকা রেমিট্যান্সে শতকরা দুই টাকা লাভ দিচ্ছে।
মূল টাকার সঙ্গে অতিরিক্ত দুই টাকা গ্রহণ করা ভোক্তার জন্য কতটুকু বৈধ? এটি সম্পূর্ণ নতুন, আধুনিক মাসআলা।
বিষয়টি একটু বিস্তারিত আলোচনা করছি, সরকার রেমিট্যান্সকে বৈধ চ্যানেলে আনার জন্যই উৎসাহ দিতে ২ শতাংশ হারে নগদ টাকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল বাজেটে। অবৈধভাবে অর্থ পাচার বন্ধ করতেই সরকারের এই উদ্যোগ। হুন্ডি থেকে মানুষকে নিরুত্সাহিত করাই মূল লক্ষ্য। পাশাপাশি এর মাধ্যমে রেমিটেন্স সঞ্চয়ও বৃদ্ধি পাবে।
বিদেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা খুব সহজে এবং সুবিধাজনক পদ্ধতিতে অনুমোদিত এবং তালিকাভুক্ত যেকোনো ফরেইন ব্যাংক, মানি ট্রান্সফার অর্গানাইজেশন(এমটিও) এবং মানি এক্সচেইঞ্জ হাউজগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রিয়জনের কাছে টাকা পাঠাতে পারছে।
পাশাপাশি গ্রাহকরা শতকরা দুই টাকা অতিরিক্ত অতিরিক্ত প্রফিট পাচ্ছে।
বিধান
উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, সরকার রেমিট্যান্সের উপর যে দুই পার্সেন্ট হারে প্রফিট প্রদান করছে- শরিয়া ক্লাসিফিকেশন অনুযায়ী তা সরকারের পক্ষ থেকে ‘ইনআম’ বা ‘পুরস্কার’।
এই টাকাটা বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারি রাজস্ব থেকেই সমন্বয় করছে। অর্থাৎ সরকার থার্ড পার্টি হিসেবে রেমিট্যান্সের উপর শতকরা দুই টাকা হারে প্রোভাইড করছে। তাই এটি গ্রহণ করতে কোনো অসুবিধা নেই। সুদ হবে না।
কেউ কেউ মনে করতে পারে- এই টাকাটা যে ব্যাংকের মাধ্যমে সেন্ড করা হচ্ছে সেই ব্যাংকই তা প্রদান করছে, সরকার বা বাংলাদেশ ব্যাংক না। এটা সঠিক নয়।
যদিও ধরে নেয়া হয় যে- অনুমোদিত এবং তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোই শতকরা এই দুই টাকা প্রোভাইড করছে তাহলেও তা গ্রহণ বৈধ হবে। কারণ তখন ধরা হবে সরকার ফরেইন মুদ্রার মূল্য শতকরা দুই টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে।
তাই এই বিশ্লেষণ অনুযায়ী এটাও বৈধ। এটা রিবাল ফজল নয়। অর্থাৎ টাকার বিনিময়ে অতিরিক্ত টাকা প্রদান নয়। প্রকৃত সত্য তো আল্লাহ ই ভালো জানেন।
লেখক: সিনিয়র মুফতি, মারকাযু শাইখিল ইসলাম আল মাদানি ঢাকা।