বেশ কয়েকটি শর্ত পূরণ করতে ব্যর্থ হওয়ায় শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দেওয়া স্থগিত করেছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। গত মাসে ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি প্রদানের কথা থাকলেও এখনও তা পায়নি কলম্বো।
দীর্ঘ কয়েক মাস তদবিরের পর ব্যাপক অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কাকে ২৯০ কোটি ডলার জরুরি ঋণ দিতে রাজি হয় আইএমএফ। ঋণের প্রথম কিস্তির ৩৩ কোটি ডলার গত মার্চে দেওয়া হয়েছিল শ্রীলঙ্কাকে।
তারপর দ্বিতীয় কিস্তির ৩৩ কোটি ডলার প্রদানের কথা ছিল ৬ মাস পর, সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু জানা গেছে সামষ্টিক করের পরিমাণ বৃদ্ধি সংক্রান্ত যে নির্দেশনা দিয়েছিল আইএমএফ, তা পালনে পুরোপুরি সফল হয়নি শ্রীলঙ্কা।
দেশটির বর্তমান বকেয়া ঋণের পরিমাণ প্রায় ৪ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। গত কয়েক বছরে বিভিন্ন সময়ে ভারত-চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে এই ঋণ নিয়েছিল দেশটি।
গত বছর বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ শেষ হয়ে যাওয়ার পর বিদেশি ঋণের কিস্তি পরিশোধ তো দূর, খাদ্য-ওষুধ-জ্বালানির মতো নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি করার মতো অর্থেও টান পড়েছিল শ্রীলঙ্কার। এই পরিস্থিতিতে দেশটিকে ঋণের কিস্তি পরিশোধ সংক্রান্ত পরিকল্পনা পুনর্গঠন করতে নির্দেশ দিয়েছিল আইএএমএফ।
শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় দুই ঋণদাতা দেশ চীন এবং ভারত উভয়ই এ ইস্যুতে শ্রীলঙ্কার প্রতি সহযোগিতামূলক মনোভাব প্রদর্শন করে জানিয়েছিল, নতুন যে পরিকল্পনা কলম্বো নেবে— তাতে সমর্থন জানাবে তারা।
আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী, সেই পুনর্গঠন পরিকল্পনা চুড়ান্ত নথিবদ্ধ রূপ গত এপ্রিলে প্রকাশ করার কথা ছিল শ্রীলঙ্কার। কিন্তু এখনও তা করতে পারেনি কলম্বো।
এদিকে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বৃহস্পতিবার ব্যাংক সুদের হার হ্রাস করেছে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্য সেন্ট্রাল ব্যাংক অব শ্রীলঙ্কা (সিবিএসএল)। এক বিবৃতিতে এ সম্পর্কে সিবিএসএলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘সরকার আশা করছে ব্যাংক সুদের ঋণ কাটছাঁট করা হলে অর্থনীতিতে গতি ফিরে আসবে।’
তবে আইএমএফ গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে বটে, কিন্তু অর্থনীতি পুরোপুরি সচল হতে আরও কত সময় লাগবে— তা এখনও অনিশ্চিত।’
অর্থসংবাদ/এসএম