স্পট মার্কেটে গতকাল স্বর্ণের দাম কমেছে দশমিক ৪ শতাংশ। প্রতি আউন্সের দাম নেমেছে ১ হাজার ৯৭২ ডলার ২৬ সেন্টে। গত শুক্রবার ধাতুটির দাম উঠেছিল ১ হাজার ৯৯৩ ডলার ২৯ সেন্টে, যা দুই সপ্তাহের সর্বোচ্চ। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে ফিউচার মার্কেটেও স্বর্ণের দাম কমেছে দশমিক ৫ শতাংশ। আউন্সপ্রতি দাম উঠেছে ১ হাজার ৯৭৪ ডলার ৬০ সেন্টে।
ব্রোকারেজ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এক্সিনিটির প্রধান বাজার বিশ্লেষক হ্যান ট্যান বলেছেন, ‘গত সপ্তাহে ২ শতাংশের বেশি বেড়ে যাওয়ার পরে স্বর্ণের বাজার এখন যেন একটু স্বস্তির নিশ্বাস নিচ্ছে। তবে চলমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিতে দাম আরো বৃদ্ধির ঝুঁকি থেকে বাজার এখনো মুক্ত নয়।’
তিনি বলেন, ‘গত সপ্তাহ থেকে ব্যবসায়ীরা স্বর্ণে আরো বিনিয়োগ বাড়াবেন নাকি বাড়াবেন না তা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। তারা আজকের ২০ বছর মেয়াদি মার্কিন ট্রেজারি নিলামের ফলাফলের অপেক্ষা করছেন বলে মনে হচ্ছে।’ রয়টার্স জানিয়েছে, এ-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ফেডের সভার কার্যবিবরণী আজ প্রকাশ হওয়ার কথা। যুক্তরাষ্ট্রে গত সপ্তাহের চাকরির নিম্নমুখী বেকারত্ব সূচক ও প্রত্যাশিত ভোক্তা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসায় ফেড এখন উচ্চ সুদহার নীতি থেকে সরে আসতে পারে। আর নিম্ন সুদহার বাজারে স্বর্ণকে আকর্ষণীয় করে তোলে।
ক্যাপিটাল ডটকমের আর্থিক বাজার বিশ্লেষক কাইল রোড্ডা বলেছেন, ‘স্বর্ণের দাম পুনরায় ২ হাজার ডলার ছাড়াতে হলে মার্কিন বেকারত্ব সূচকের ও ভোক্তা মূল্যস্ফীতি যতটা নিয়ন্ত্রণে আসা প্রয়োজন এখনো ততটা হয়নি। তাই ফেড সুদহার সামান্য কমালে স্বর্ণের দাম অস্বাভাবিক বাড়বে না।’
এদিকে গতকাল প্রতিদ্বন্দ্বী মুদ্রার বিপরীতে দশমিক ৩ শতাংশ মূল্য হারিয়ে ডলার গত আড়াই মাসের সর্বনিম্নে নেমেছে। ডলারের এ অবনমন স্বর্ণের দরপতন কিছুটা ঠেকিয়ে দিয়েছে। বিশ্বের শীর্ষ স্বর্ণ এক্সচেঞ্জ এসপিডিআর গোল্ড ট্রাস্ট হোল্ডিংসের দাম শুক্রবার ১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে।
স্পট মার্কেটে গতকাল রুপার দাম দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে। আউন্সপ্রতি দাম নেমেছে ২৩ ডলার ৫৭ সেন্টে। একই সময়ে প্লাটিনামের দাম বেড়েছে দশমিক ১ শতাংশ। প্রতি আউন্স বিক্রি হয়েছে ৯০০ ডলার ১১ সেন্টে। আর প্যালাডিয়ামের দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে প্রতি আউন্সে দাম উঠেছে ১ হাজার ৫৫ ডলার ২৫ সেন্টে।
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান অস্থিরতার প্রভাবে নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবে পরিচিত স্বর্ণের দাম বাড়তে শুরু করে। গত ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের প্রভাবে ধাতুটির চাহিদা বেড়ে দাম ওঠে ২ হাজার ডলারের ওপরে। ব্যতিক্রমী ঘটনা হিসেবে বিশ্বে এ সময় একই সঙ্গে ঊর্ধ্বমুখী ছিল ডলার ও স্বর্ণের দাম।
অর্থসংবাদ/এমআই