সপ্তমবারের মতো পতনের মুখে জ্বালানি তেলের সাপ্তাহিক বাজার

সপ্তমবারের মতো পতনের মুখে জ্বালানি তেলের সাপ্তাহিক বাজার

টানা সাত সপ্তাহ পতনের পথে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজার, যা পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথম কোনো ঘটনা। সরবরাহ উদ্বৃত্ত ও চীনা চাহিদা কমায় পণ্যটির দরপতনে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। যদিও মাঝে সৌদি আরব ও রাশিয়াসহ ওপেক প্লাস জোটের আগামী বছরও উত্তোলন কমানোর ঘোষণায় বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল।


সাপ্তাহিক গড় মূল্য নিম্নমুখী থাকলেও গতকাল জ্বালানিটির দাম কিছুটা বেড়েছে। আইসিই ফিউচার্সে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম শুক্রবার ২ শতাংশ বা ১ ডলার ৫১ সেন্ট বেড়েছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭৫ ডলার ৫৬ সেন্টে। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম বেড়েছে ২ শতাংশ বা ১ ডলার ৪২ সেন্ট। ব্যারেলপ্রতি দর উঠেছে ৭০ ডলার ৭৬ সেন্টে। এর আগে ব্রেন্টের দাম ২ ডলার পর্যন্ত বেড়েছিল।


এর আগে বৃহস্পতিবার উভয় বাজার আদর্শের দামই গত জুনের দ্বিতীয়ার্ধের পর থেকে সর্বনিম্নে। অনেক ব্যবসায়ীই মনে করতে শুরু করেছেন বাজারে সরবরাহ উদ্বৃত্ত। ফলে দাম নিম্নমুখী। রয়টার্স জানিয়েছে, সামনের মাসে সরবরাহ চুক্তিতে ব্রেন্ট ও ডব্লিউটিআই বাজার আদর্শের দরে মূল্যছাড় দেয়া হয়েছে।


জ্বালানি তেলের ব্রোকার পিভিএমের তমাস ভার্গ বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উত্তোলন বাড়ানোয় এবং চীন আমদানি কমানোয় ওপেক প্লাসের ঘোষণার প্রভাব দুর্বল হয়ে গেছে। কারণ বাজারে তেল সরবরাহ বেড়েছে। ফলে উভয় বাজার আদর্শে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে।’ তবে শুক্রবারের দাম বৃদ্ধিকে তিনি ‘বাজার মূল্য সংশোধন’ হিসেবে দেখেছেন।


‘বিশ্ব অর্থনীতির ভালোর জন্য’ বৃহস্পতিবার ওপেক প্লাস জোটের সদস্যদের উত্তোলন কমানোর চুক্তিতে সই করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। এ আহ্বান এমন একসময় এল যার ঠিক সাতদিন আগেই গত ৩০ নভেম্বর জোটের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে অনলাইনে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল।


৩০ নভেম্বরের সভায় জোটটি ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিক পর্যন্ত দৈনিক ২২ লাখ ব্যারেল উত্তোলন কমাতে সম্মত হয়েছে।


পণ্যবাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কেপলারের জ্বালানি তেল বিশ্লেষক ভিক্টর কাটোনা বলেন, ‘ওপেক প্লাস উত্তোলন কমানো সত্ত্বেও আমরা দেখতে পাচ্ছি, ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত দৈনিক মাত্র ৩ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল সরবরাহ কমতে পারে। আবার ওপেক প্লাসের কিছু সদস্য উত্তোলন কমানোর প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারবে না। বিশেষ করে যে দেশগুলোর অর্থনীতি জ্বালানি তেলের আয়ের ওপর বড় অংশে নির্ভরশীল।’


ব্রেন্ট ও ডব্লিউটিআইয়ের দাম চলতি সপ্তাহে যথাক্রমে ৪ দশমিক ২ ও ৪ দশমিক ৫ শতাংশ পতনের পথে, পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে যা সবচেয়ে বড় দরপতনের নজির হতে যাচ্ছে।


এদিকে চীনে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মজুদ পূর্ণ থাকায় এবং অর্থনৈতিক মন্থরতার কারণে নভেম্বরে আগের বছরের একই মাসের তুলনায় পণ্যটির আমদানি কমেছে ৯ শতাংশ। চীনা চাহিদা কমার কারণও পণ্যটির দাম কমাতে বাজারে বড় প্রভাবকের কাজ করেছে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে উত্তোলন রেকর্ড সর্বোচ্চের কাছাকাছি। ইউএস এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জানিয়েছে, দেশটি এখন দৈনিক ১ কোটি ৩০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল উত্তোলন করছে।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পেট্রোল-ডিজেলের নতুন দাম ঘোষণা
ভিসা ছাড়াই যুক্তরাজ্যে যেতে পারবে মুসলিম ৬ দেশ
মারা গেছেন পণ্ডিত ভবানী শঙ্কর
২০২৩ এ আলোচিত বিশ্বের সেরা ১০ ঘটনা
ব্রিকসে যোগ দেবে না আর্জেন্টিনা
নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত বিশ্ববাসী
১০ টাকাতেই মিলবে বই
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী ফ্রাঁসোয়া বেটেনকোর্ট
সৌদি আরবে আরো একটি স্বর্ণের খনির সন্ধান
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপলো ইন্দোনেশিয়া