আজ সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত শ্রম অধিকার ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ক এক সেমিনারে এ সব কথা বলেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফের সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।
প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য ও বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ ড. মোস্তফা আবিদ খান। বিশেষ বক্তা ছিলেন নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম এবং সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, আইএলও–সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি আ ন ম সাইফুদ্দিন, ইন্ডাস্ট্রি অল বাংলাদেশ কাউন্সিলের (আইবিসি) সভাপতি আমিরুল হক আমিন ও শ্রমিক নেতা তৌহিদুর রহমান।
ড. মোস্তফা আবিদ খান বলেন, বাণিজ্যের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের যে বার্তা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পারছি সেখানে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা বা স্যাংশনের বিষয়ে বলা হয়নি। ট্রেড প্যানাল্টি বা জরিমানার কথা বলছে। এ ক্ষেত্রে ১০ শতাংশের মতো রপ্তানিতে ট্যারিফ দিতে পারে। স্যাংশন এখনই হবে না, এটা আস্তে আস্তে একটা পর্যায় গিয়ে আসবে। তবে আমেরিকা কীভাবে কী করবে, এখনো বিষয়টি পরিষ্কার নয়।
নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, শ্রম অধিকার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা (স্যাংশন) দেওয়ার সুযোগ নেই। যদি সেকশন আসে তাহলে রাজনৈতিক কারণে আসবে। এ ক্ষেত্রে মালিক শ্রমিকদের কিছু করার নেই। এ ধরনের স্যাংশন আসলে মালিক শ্রমিক ও সরকার সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই এই স্যাংশন সরকারকে কূটনৈতিকভাবে ঠেকাতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে পোশাক মালিকদের এই নেতা জানান, আমেরিকা কি সমস্যা করবে? দেশে এর চেয়ে বড় সমস্যা মোকাবিলা করছি। বিশেষ করে ব্যাংকের সমস্যায় পরছি, কাস্টমসের নানা সমস্যা, বিদ্যুৎ নাই, চরম গ্যাস সংকট- এতো সংকটের মধ্যে আমেরিকার স্যাংশন নিয়ে চিন্তা করার সময় নেই; তাই এটা আমরা ভাবছিও না। কারণ এর চেয়ে বড় বড় সমস্যা দেশেই মোকাবিলা করছি।
আইএলও–সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি আ ন ম সাইফুদ্দিন বলেন, মালিকরা সব সময় ট্রেড ইউনিয়নের পক্ষে যদি নেতারা কারখানার উন্নয়নে সহযোগিতা করে।
বিকেএমইএর সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন, সংশোধিত শ্রম আইনে মালিক-শ্রমিকের সব দিক বিবেচনায় আনা হয়নি, হযবরল অবস্থা ছিল। রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানাই তিনি তাতে স্বাক্ষর করেননি। শ্রম বিষয়ে বর্তমানে আমরা অনেক দেশ থেকে ভালো অবস্থানে আছি। আন্তর্জাতিক মানের দিক থেকেও ভালো আছি। তাই এখন যদি কোনো স্যাংশন হয় তাহলে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে হবে। এ সমস্যা সমাধানে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে।
শ্রমিক নেতা তৌহিদুর রহমান বলেন, আমেরিকার শ্রম নীতিকে অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে। ব্যবসা ধরে রাখতে হলে আমাদের তাদের ম্যামোরান্ডাম বিবেচনায় করতে হবে। এখন যেহেতু শ্রম আইন পাশ হয়নি তাই এখানে কিছু সংশোধনের বিষয় আছে। শ্রম আইনের বেশকিছু বিষয় শ্রমিক মালিক একমত হয়েছে কিন্তু আইনে আনা হয়নি, এগুলো যুক্ত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে শ্রমিক নেতারা জানান, বর্তমানে যেসব কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন আছে তার মধ্যে ৫০ শতাংশ ইউনিয়ন সচল বা একটিভ আছে, বাকি ৫০ শতাংশ সচল নেই। এটা মালিকদের যথাযথ সহযোগিতা না পাওয়ার কারণে এমন হচ্ছে। তবে মালিক পক্ষ বলেছেন ট্রেড ইউনিয়নে তাদের কোনো আপত্তি নেই যদি সেটা কারখানা ও শ্রমিকদের উন্নয়নের জন্য হয়।