ভিয়েতনাম চলতি বছরের জানুয়ারি-নভেম্বর পর্যন্ত প্রথম ১১ মাসে ১৪ লাখ টন কফি রফতানি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ৪ শতাংশ কম। গতকাল এ তথ্য প্রকাশ করেছে দেশটির কাস্টমস অফিস।
রফতানির পরিমাণ কমলেও আয় বেড়েছে ভিয়েতনামের। কাস্টমস অফিসের তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি-নভেম্বর পর্যন্ত দেশটি আন্তর্জাতিক বাজারে কফি বিক্রি করে ৪৩৩ কোটি ডলার আয় করেছে। ২০২২ সালের জানুয়ারি-নভেম্বর সময়ের চেয়ে যা দশমিক ৪ শতাংশ বেশি। মূলত কফির উচ্চমূল্যের কারণে এ আয় প্রবৃদ্ধি পেয়েছে দেশটি।
ভিয়েতনাম বিশ্বের বৃহত্তম রোবাস্তা কফি বিন উৎপাদনকারী। সম্প্রতি হো চি মিন সিটিতে অনুষ্ঠিত ২৭তম এশিয়া আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ভিয়েতনামিজ কফি অ্যান্ড কোকো অ্যাসোসিয়েশন চেয়ারম্যান নগুয়েন নাম হাই বলেন, ‘২০২৩-২৪ মৌসুমে কফি আবাদি জমির পরিমাণ ৫০ শতাংশ কমে গেছে। তাই উৎপাদন প্রত্যাশার চেয়েও কম হতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘কোনো মজুদ উদ্বৃত্তও নেই অথচ স্থানীয় চাহিদা বাড়ছে। তাই সামনে রফতানি মূল্য আরো বেড়ে যাবে। প্রতিকূল আবহাওয়া ও আবাদি জমির পরিমাণ কমে যাওয়ায় চলতি মৌসুমে উৎপাদন নামতে পারে ১৬-১৭ লাখ টনে। আগের ২০২২-২৩ মৌসুমে ১৭ লাখ ৮০ হাজার টন কফি উৎপাদন হয়েছিল।’
এরই মধ্যে ২০২৩ সালের নভেম্বর পর্যন্ত রফতানি ১০ শতাংশের বেশি কমে গেছে। নগুয়েন নাম হাই মনে করেন, ‘ডিসেম্বর শেষে ২০২৩ সালের মোট রফতানি ১৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে।’
অন্যদিকে মার্কিন কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) পূর্বাভাস মতে, ভিয়েতনামে ২০২৩-২৪ মৌসুমে কফি উৎপাদন ২ কোটি ৭৮ লাখ ব্যাগে (প্রতি ব্যাগে ৬০ কেজি) নামতে পারে, যা গত মৌসুমের ৩ কোটি ১৩ লাখ ব্যাগ থেকে কম। এদিকে ইন্দোনেশিয়ার কফি উৎপাদনও ১৮ দশমিক ১৪ শতাংশ কমে ৯৭ লাখ ব্যাগে নামার আশঙ্কা ইউএসডিএর।
ভিয়েতনামের অন্যতম প্রধান কফি রফতানি সংস্থা ইনটাইমেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ডো হা নাম বলেছেন, ‘কফি চাষের এলাকা অনেক কমে গেছে। এক হেক্টর জমিতে যেখানে অ্যাভোকাডো চাষ করলে পাওয়া যায় ১০০-১৫০ কোটি ডং, সেখানে একই পরিমাণ জমিতে কফি চাষ করে আসে মাত্র ২০ কোটি ডং। কফির চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি লাভ হয় অ্যাভাকাডোতে। এ কারণে কৃষকরা এখন কফি চাষের আগ্রহ হারাচ্ছেন।’
কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, কাগজে-কলমে ভিয়েতনামে এখন সাত লাখ হেক্টর জমিতে কফি চাষ হয়। কিন্তু বাস্তবে কফি চাষের আওতায় রয়েছে ছয় লাখ হেক্টর জমি।