সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে প্রথম ধাপের পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের কিছু কাগজপত্র জমার নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। নিজ নিজ জেলার প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে প্রার্থীদের ১০ জানুয়ারির মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো জমা দিতে হবে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাগজপত্র জমা দিতে না পারলে উত্তীর্ণ হলেও ওই প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে কোনো কার্ড (অনুমতিপত্র) দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছে অধিদপ্তর।
সম্প্রতি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পলিসি অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের পরিচালক (যুগ্মসচিব) মনীষ চাকমার সই করা চিঠিতে এতথ্য জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ৮ ডিসেম্বর তিন বিভাগের ১৮ জেলায় অনুষ্ঠিত প্রথম গ্রুপের পরীক্ষায় ফলাফলের ভিত্তিতে মোট ৯ হাজার ৩৩৭ জন প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। নির্বাচিত প্রার্থীদের অনলাইনে আবেদনের আপলোড করা ছবি, আবেদনের কপি, লিখিত পরীক্ষার প্রবেশপত্র, নাগরিকত্ব ও স্থানীয় ঠিকানার সপক্ষে ইউপি চেয়ারম্যান বা পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলের সনদপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) এবং শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রসহ পোষ্য সনদ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ১০ জানুয়ারির মধ্যে নিজ নিজ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জমা দিয়ে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র সংগ্রহ করতে হবে। জমা দেওয়া সব কাগজপত্রে ন্যূনতম নবম গ্রেডের গেজেটেড কর্মকর্তা কর্তৃক সত্যায়িত করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে সব সনদ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ফটোকপি (সত্যায়িত) জমা দেওয়ার সময় ওইসব কাগজপত্রের মূলকপি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে দেখাতে হবে। মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত প্রার্থীরা ১০ জানুয়ারির মধ্যে উল্লেখিত কাগজপত্র জমা দিতে ব্যর্থ হলে তাদের অনুকূলে মৌখিক পরীক্ষার কার্ড ইস্যু করা হবে না।
মৌখিক পরীক্ষার সময় জেলা শিক্ষা অফিসে জমা দেওয়া সব সনদপত্র, প্রাপ্তি স্বীকারপত্র ও অন্যান্য কাগজপত্রের মূল কপি প্রার্থীকে সঙ্গে আনতে হবে। মৌখিক পরীক্ষার তারিখ পরবর্তীতে জানানো হবে এবং তা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে বলেও এতে জানানো হয়।
গত ৮ ডিসেম্বর রংপুর, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ১৮ জেলায় একযোগে প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন করেন তিন লাখ ৬০ হাজার ৬৯৭ চাকরিপ্রার্থী।
এদিকে, অনিয়ম-জালিয়াতি হয়েছে অভিযোগ তুলে পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন কিছু প্রার্থী। তারা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে লিখিত আবেদন ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি করেন। পাশাপাশি ৫৪ জন প্রার্থীর পক্ষে ফাতেমা আক্তার নামের একজন প্রার্থী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছেন। আগামী ২ জানুয়ারি রিটটি শুনানির জন্য হাইকোর্টের কার্যতালিকায় রয়েছে।
এরই মধ্যে গত ২০ ডিসেম্বর রাতে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ করা হয়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ৯ হাজার ৩৩৭ জন। জাতীয় নির্বাচনের পর তাদের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার কথা রয়েছে।
অন্যদিকে ৮ ডিসেম্বর পরীক্ষার দিনে জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার রফিকুল ইসলাম নামের লালমনিরহাটের একজন প্রার্থীও প্রকাশিত ফলাফলে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এনিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। তাছাড়া জালিয়াতি অনিয়মের অভিযোগ প্রায় দেড়শো জন গ্রেফতার এবং ৭০ জন প্রার্থী বহিষ্কার হয়েছেন।