ডিসির উদ্যোগে ময়মনসিংহে ৫৫০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি

ডিসির উদ্যোগে ময়মনসিংহে ৫৫০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি

পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে ময়মনসিংহে নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য ৫৫০ টাকায় এক কেজি গরুর মাংস ও ১০০ টাকায় এক ডজন ডিম বিক্রি শুরু হয়েছে। এতে বর্তমান বাজার মূল্য থেকে এক কেজি গরুর মাংসে ২০০ টাকা এবং এক ডজন ডিম থেকে ১২-১৫ টাকা কম পাচ্ছেন ক্রেতারা।


ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক (ডিসি) দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর উদ্যোগ বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সকালে ও বিকেলে প্রথমদিনের মতো দুই ধাপে সুলভ মূল্যে মাংস ও ডিম বিক্রির এ কার্যক্রম শুরু হয়।


এ সময় জেলা প্রশাসকের এই উদ্যোগকে প্রশংসনীয় উল্লেখ করে স্বাগত জানান নগরীর বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সাধারণ মানুষ।


তারা বলেন, চলমান বাজার পরিস্থিতিতে বিশেষ করে পবিত্র রমজান মাসে জেলা প্রশাসকের এই উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। আমরা এই কার্যক্রমকে স্বাগত জানাই। আশা করছি প্রথমদিনের এই কার্যক্রমের নানাদিক পর্যালোচনা করে এর ব্যাপ্তি আরও বাড়ানো হবে। এতে উপকৃত হবে নিম্ন আয়ের মানুষ।


জানা গেছে, জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ যৌথভাবে এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। এতে বিক্রি ও বিপণন কার্যক্রমে সহযোগিতা করছেন জেলা ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশন।


জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল জলিল বলেন, জেলা প্রশাসনের নিজস্ব তহবিল থেকে কিছু ভর্তুকি দিয়ে এবং সমাজের কিছু দানশীল ব্যক্তির সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার প্রথমদিনের মতো এই কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। রমজান মাসের প্রতি বুধ ও বৃহস্পতিবার এই কার্যক্রম চলমান থাকবে। তবে জেলা প্রশাসক চাইলে এর ব্যাপ্তি বা আয়োজন আরও বাড়তে পারে।


জানা গেছে, প্রথমদিন এই কার্যক্রমে নিম্ন আয়ের আট শতাধিক মানুষের মধ্যে দুটি ষাঁড় গরু জবাই করে ৪০০ কেজি মাংস এবং পাঁচ হাজার পিস ডিম বিক্রি করা হয়। এতে জনপ্রতি এক কেজি মাংস এবং এক ডজন ডিম দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুবুর রহমান।


এদিকে, এই কার্যক্রমের প্রথম দিনেই ব্যাপক সাঁড়া পড়েছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষদের মধ্যে। এ সময় দীর্ঘ লাইনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে গরুর মাংস ও ডিম কিনতে দেখা গেছে তাদের। এ সময় জেলা প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরও লাইনে দাঁড়িয়ে মাংস কিনতে দেখা যায়।


সরেজমিনে এই কার্যক্রম দেখতে গিয়ে কথা হয় ত্রিশাল উপজেলার বীর রামপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. শহীদুল্লাহ মিয়ার (৭২) সঙ্গে। তিনি জানান, একটি মামলার কাজে তিনি এসেছিলেন কাচারিতে। তখন জানতে পারেন ডিসি অফিস থেকে কমদামে গরুর মাংস বিক্রি করছে, এই খবরে তিনি লাইনে দাঁড়িয়ে এক কেজি মাংস কিনেছেন।


এ সময় মাংস কিনতে পেরে উচ্ছ্বসিত শহীদুল্লাহ বলেন, ডিসি অফিস খুব ভালো কাজ করছে। এতে আমার মতো অনেক গরিবরা এই রমজানে একটু মাংস কিনে খেতে পারবে, মানুষ উপকার পাবে।


নগরীর জিরো পয়েন্ট এলাকার মোছা. আমেনা খাতুন (৫২) বলেন, দাম বেশির কারণে অনেকদিন ধরে গরুর মাংস কিনে খাইনি। আজকে দাম কম পেয়ে এক কেজি মাংস কিনছি। অনেকদিন পর মাংস খাবো ভাবতেই খুব ভালো লাগছে।


তবে প্রথমদিনের এই কার্যক্রমে লাইনে দাঁড়িয়েও শেষতক মাংস না পেয়ে ফিরে গেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. শফিকুল ইসলামসহ বেশকিছু মানুষ।


শফিকুল ইসলাম বলেন, এই কার্যক্রমের পরিমাণ আরও বাড়ানো দরকার। কেননা আমার মতো আরও কয়েকজন লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও মাংস শেষ হয়ে যাওয়ায় আর কিনতে পারেননি। আশা করছি আগামী দিনে কর্তৃপক্ষ এই আয়োজনের পরিধি আরও বড় করবে।


এ বিষয়ে ডিসি দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, চেষ্টা করছি রমজান মাসজুড়ে সুলভ মূল্যে মাংস ও ডিম বিক্রির কার্যক্রমটি চালু রাখতে। তবে এই আয়োজনে ভর্তুকির পরিমাণ অনেক বেশি। তবুও চেষ্টা করছি বিত্তবানদের সহযোগিতা পাওয়া গেলে এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে। কিন্তু এই কাজে সবাইকে খুশি করা অনেক কঠিন। তবে আমরা চেষ্টা করছি।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

রংপুরে ৮ জনের অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত, ছড়িয়েছে যেসব জায়গায়
মঙ্গলবার বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
চাঁদাবাজির অভিযোগে গণপিটুনি, ইউপি সদস্য নিহত
অবরোধে স্থবির খাগড়াছড়ি, থমথমে গুইমারা
শিশু তায়েবা হত্যাকাণ্ডে চাচিসহ গ্রেপ্তার ৩
অবরোধে থমথমে খাগড়াছড়ি, ১৪৪ ধারা বহাল
খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি
খাগড়াছড়িতে সড়ক অবরোধ, বিপাকে পর্যটকরা
বিপৎসীমার ওপরে কাপ্তাই বাঁধের পানি
গাজীপুরে ঝুটের গোডাউনে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৭ ইউনিট