এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। আলোচ্য তহবিল থেকে শুধু ব্যাংকগুলোই ঋণ দিতে পারে, কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান পারে না।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোনার কারণে দেশের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বড় শিল্প ও সেবা খাতে চলতি মূলধনের জোগান দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে গত ১২ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংক একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রথমে এ খাতের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করা হয়। পরে এর আকার আরও তিন হাজার কোটি টাকা বাড়িয়ে ৩৩ হাজার কোটি টাকা করা হয়। প্রথমে এ তহবিল থেকে শুধু দেশীয় উদ্যোক্তাদের ঋণ দেয়ার শর্ত ছিল। পরে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষ (বেপজা) ও হাইটেক পার্কে অবস্থিত বিশেষায়িত শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রণোদনার আওতায় চলতি মূলধনের জোগান দিতে উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়। কেননা এসব প্রতিষ্ঠানও করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব শিল্পে নিরবচ্ছিন্নভাবে অর্থের জোগান অব্যাহত রাখতে এবং উৎপাদনের ধারায় ফিরিয়ে আনতে এ খাতেও ঋণ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এ পরিপ্রেক্ষিতে এ তহবিলের আকার আরও সাত হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হল। বাড়তি সাত হাজার কোটি টাকা থেকে কেবলমাত্র বেজা, বেপজা ও হাইটেক পার্কগুলোতে অবস্থিত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ পাবে। এসব অঞ্চলে তিন ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে শতভাগ বিদেশি, শতভাগ দেশি ও দেশি বিদেশি যৌথ মালিকানাধীন কারখানা। এসব প্রতিষ্ঠানই এখন এ তহবিল থেকে কম সুদে ঋণ পাবে।
প্রথম ৩০ হাজার কোটি ও এখনকার সাত হাজার কোটি টাকা বড় শিল্প ও সেবা খাতে চলতি মূলধন হিসেবে জোগান দেয়া হবে। আগের তিন হাজার কোটি টাকা দেয়া হয়েছে রফতানিমুখী শিল্পের শ্রমিক কর্মচারীদের বেতন ভাতা পরিশোধের জন্য। এই খাতে এর আগে আরও পাঁচ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠন করা হয়েছিল। বেতন ভাতা খাতে দেয়া হল মোট আট হাজার কোটি টাকা। ইতোমধ্যে পুরো টাকা ছাড় হয়ে গেছে।
এ তহবিলের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রথমে জোগান দেয়া হয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকা। পরের তিন হাজার কোটি টাকাও দেয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে। এখনকার ৭ হাজার কোটি টাকার মধ্যে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ ঋণের সুদের হার হবে ৯ শতাংশ। এর মধ্যে উদ্যোক্তাদের দিতে হবে সাড়ে ৪ শতাংশ। বাকি সাড়ে ৪ শতাংশ সরকার থেকে ভর্তুকি হিসেবে দেয়া হবে।