তিনি বলেন, গত তিন থেকে চার বছরের জমে থাকা আইপিওর আবেদনগুলো প্রায় শেষ। নতুন করে যেসব কোম্পানি আবেদন করবে তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে অনুমোদন দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে তিন মাস নয়, কাগজপত্র ঠিক থাকলে এক মাসের মধ্যে অনুমোদন দেওয়া হবে। আমরা আইপিও অনুমোদনের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সময় ক্ষেপণ করবো না।
আজ শনিবার (৩১ অক্টোবর) ‘পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি এবং টেকসই উন্নয়ন’ নিয়ে আয়োজিত ওয়েবিনারের বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) এবং বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স এসোসিয়েশন (বিএমবিএ) যৌথভাবে এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে।
শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারে ভালো আইপিও আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। আইপিও অনুমোদন দেওয়ার ক্ষেত্রে কোম্পানির বিগত বছরগুলোর ব্যবসা পর্যালোচনা করছি। বিশেষ করে কোম্পানিটির পেইড-আপ ক্যাপিটাল (পরিশোধিত মূলধন) কত এবং ৫ বছরের ট্যাক্স রেকর্ড বিশ্লেষণ করছি।
মিউচ্যুয়াল ফান্ডকে আরও জনপ্রিয় করতে চাই উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে অনেক ফান্ড বিনিয়োগকারীদের কোনো রিটার্ন দিচ্ছে না, এটা ঠিক না। এ সময়ে অনেক মিউচ্যুয়াল ফান্ড লভ্যাংশ দিলেও কিছু ফান্ড দিচ্ছে না। কারো চাপে নয়, বাজারের জন্যই পুঁজিবাজারে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রকৃত রুপ দিতে চাই।
পুঁজিবাজারকে সাপোর্ট দেওয়ার জন্য ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশকে (আইসিবি) পুনসংস্কার করার কথা জানিয়ে শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, আইসিবিকে ফান্ড দিয়ে আরও শক্তিশালী করতে হবে। বাজারের নেগেটিভ ইক্যুইটিগুলো দূর করতে বিশেষ ফান্ড আসছে। সুদ কমিয়ে আনা হবে।
তিনি আরও বলেন, বাইব্যাক পদ্ধতি চালু করা হবে। এক্ষেত্রে বাইব্যাক পলিসির কাজ করা হচ্ছে। বাইব্যাকের জন্য কোম্পানি আইনে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। বাজার গ্রিন ফিল্ড কোম্পানি আনা হবে। এ ক্ষেত্রে ই-কমার্স কোম্পানিগুলোকে অনুমতি দেওয়া হবে। অর্থাৎ একটি গতিশীল পুঁজিবাজার গড়ে তোলা হবে।
পুঁজিবাজার ডিজিটাইলড করা হচ্ছে উল্লেখ করে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, বিদেশ থেকে একটি টিম আসছে। চলতি সপ্তাহে ডিএসই পরিদর্শন করবে। পুঁজিবাজারকে ডিজিটাইল করা হবে।
তিনি বলেন, সিডিবিএলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ন্যাশনাল আইডির মাধ্যমে কিভাবে অনলাইনে বেনিফিশিয়ারি একাউন্ট (বিও) খোলা যায় সেই লক্ষে কাজ করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম ও ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর প্রেসিডেন্ট শামস মাহমুদ।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএমবিএর সভাপতি ছায়েদুর রহমান ও সিএমজেএফের সভাপতি হাসান ইমাম রুবেল। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএমবিএর ভাইস-প্রেসিডেন্ট মো. মনিরুজ্জামান।
বিশেষ অথিতির বক্তব্যে শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, দেশের সকল ব্যাংক, বীমা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সকল প্রতিষ্ঠানকে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতায় আনতে হবে। এক্ষেত্রে কোন ছাড় নয়। আমরা চাই কর জিডিপি রেশিও বাড়াতে।
তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে ডে ট্রেডিংয়ের মত আমাদের বিনিয়োগ, এটাকে দীর্ঘ মেয়াদী হতে হবে। বিভিন্ন গ্রিনফিল্ড কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসা উচিৎ। আমরা ফান্ডের জন্য ব্যাংকে যেতে চাই না। পুঁজিবাজার থেকে ফান্ড উত্তোলন করতে চাই। আমরা উদ্যোক্তারা পুঁজিবাজার থেকে অর্থ নিতে প্রস্তুত।