প্রণোদনা ঋণ বিতরণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন রপ্তানি খাতে

প্রণোদনা ঋণ বিতরণে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন রপ্তানি খাতে
করোনায় বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে ঘুরে পুনরুদ্ধারে ১৯ ধরনের প্রণোদনার প্যাকেজ ঋণ ঘোষণা করা হয়েছে ব্যবসায়ীদের জন্য। এর মধ্যে রপ্তানি শিল্পের জন্য পাঁচ বিলিয়ন ডলারের ঋণও অন্যতম। রপ্তানি বৃদ্ধিতে বিশেষ সহায়তা দিতে এ তহবিলের সুদহার নির্ধারণ করা হয় পৌনে দুই শতাংশ। অক্টোবর পর্যন্ত এ তহবিলের পুরোটাই বিতরণ হলো। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

অপরদিকে অন্যান্য খাতের ঋণ বিতরণের হার এ পর্যন্ত অর্ধেকেও পৌঁছায়নি। ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ ঋণগুলোর মধ্যে এটিই প্রথম লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করল।

জানা গেছে, রপ্তানিকারকদের উৎসাহিত করতে এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইডিএফ) তহবিল গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। করোনাকালে এ তহবিল থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা করা হয়, স্থানীয় মুদ্রায় যা ৪২ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা। এ তহবিলে সুদের হার ঠিক করা হয় প্রথমে দুই শতাংশ। পরে দশমিক ২৫ শতাংশীয় পয়েন্ট কমিয়ে নির্ধারণ করা হয় মাত্র এক দশমিক ৭৫ শতাংশ। এ তহবিল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদে ঋণ দেবে। আর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এক দশমিক ৭৫ শতাংশ সুদে উদ্যোক্তাদের ঋণ বিতরণ করবে।

গতকাল পর্যন্ত এ তহবিলের চার দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার বিতরণ করেছে ব্যাংক। এ পরিমাণ অর্থ ব্যবসায়ীরা নিয়েছেন। জানা গেছে, মূলত তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরাই নিয়েছেন পুরো অর্থ।

ইডিএফ তহবিলের ঋণ পেয়ে ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হচ্ছেন। সচল হয়েছে তৈরি পোশাকশিল্পের অধিকাংশ কারখানা। এ বিষয়ে এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইএবি) সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী শেয়ার বিজকে বলেন, ‘ইডিএফ তহবিলের ঋণ আমাদের জন্য বিশেষ সুযোগ নিয়ে এসেছে। আমরা প্রাণশক্তি ফিরে পাচ্ছি, যার ফল পেতে শুরু করেছি। আমাদের রপ্তানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তৈরি পোশাক খাতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বকেয়া থাকছে না। আমরা আশা করি রপ্তানি আরও বৃদ্ধি পাবে।’

ইডিএফ তহবিলের অর্থছাড়ের ইতিবাচক প্রভাব দেখা গেছে রপ্তানি খাতেও। রপ্তানি আয় নেতিবাচক থেকে ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে ৩০১ কোটি ৮৭ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রপ্তানি ৯৮৯ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয় দুই দশমিক ৫৮ শতাংশ।

প্রসঙ্গত, রপ্তানিমুখী শিল্পের বিকাশ ও প্রসারে সহযোগিতা করতে বৈদেশিক মুদ্রায় স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা দিতে ১৯৮৯ সালে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল গঠিত হয়। মাত্র ৩৮ লাখ ৭২ হাজার ডলার নিয়ে এ তহবিলের যাত্রা শুরু হয়। ২০০৫ সালে এটি ১০ কোটি ডলারে (৮৪৭ কোটি টাকা) উন্নীত করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে আকার বাড়িয়ে সবশেষ চলতি বছরের এপ্রিলে পাঁচ বিলিয়ন ডলারে (৪২ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা) উন্নীত করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ইডিএফ তহবিলের পাশাপাশি বড় ও সেবা খাতের শিল্পের জন্য ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনার ঋণ ঘোষণা করা হয়, যা পরে ৩৩ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত হয়। রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করার জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার আপৎকালীন প্রণোদনা দেওয়া হয়।

ছয় মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ এই ঋণের টাকা পরিশোধে সময় পাওয়া যাবে দুুই বছর। শুধু শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ঋণ গ্রহণ করা যাবে। ঋণের টাকা শ্রমিকদের ব্যাংক বা মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবের মাধ্যমে সরাসরি দেওয়ার কথা বলা হয়। এছাড়া প্রিশিপমেন্ট ক্রেডিট রিফাইন্যান্স স্কিম নামে পাঁচ হাজার কোটি টাকার ঋণও সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা করা হয়। এসব খাত থেকে শিল্পের চলতি মূলধন ঋণ নিতে পারবেন উদ্যোক্তারা।

অর্থসংবাদ/ এমএস

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

বিদেশি ডেবিট কার্ডে অর্থ তোলা বন্ধ করল ইবিএল
এসবিএসি ব্যাংকের নতুন এএমডি নূরুল আজীম
বছরজুড়ে আলোচনায় খেলাপি ঋণ, সুদহার ও বিনিময়হার
বিকাশের প্রধান যোগাযোগ কর্মকর্তা মাহফুজ মারা গেছেন
ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন পর্ষদের ৩ কমিটি গঠন
ব্যাংকে চাকরির আবেদনের বয়সসীমা শিথিল
মাসিক সঞ্চয় হিসাব খোলা যাচ্ছে বিকাশ অ্যাপে
ফের এবিবির চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন
অফিসার পদে ৭৮৭ জনকে নিয়োগ দেবে সরকারি ৫ ব্যাংক
ন্যাশনাল ব্যাংকের নতুন পরিচালক হলেন যারা