কোম্পানিগুলোতে মোট কত টাকার লভ্যাংশ এভাবে পড়ে আছে তার সঠিক কোনো হিসেব নেই। তবে ধারণা করা হয়, দাবিদারবিহীন লভ্যাংশের পরিমাণ কয়েক হাজার কোটি টাকা হতে পারে। এর মধ্যে যেমন নগদ লভ্যাংশ রয়েছে। তেমনই বোনাস শেয়ারও রয়েছে।
উল্লেখ, ডিম্যাট পদ্ধতির আওতায় বর্তমানে কোনো কোম্পানি বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করলে বিনিয়োগকারীর প্রাপ্য শেয়ার স্বয়ংক্রিয়ভাবে তার বিও হিসাবে জমা হয়। কিন্তু সিডিএস পদ্ধতি চালু হওয়ার আগে কাগজের শেয়ার সার্টিফিকেট ইস্যু করা হতো। অনেক বিনিয়োগকারীর প্রাপ্য বোনাস শেয়ার বছরের পর বছর ধরে কোম্পানিতে পড়ে আছে। এগুলো কেউ নিতে আসছে না। আবার ডাকে পাঠানো অনেক শেয়ার সার্টিফিকেট ফেরত এসেছে ওই ঠিকানায় প্রাপককে না পাওয়ায়।
বছরের পর বছর কোম্পানির কব্জায় থাকা এইসব বিনিয়োগকারীদের অর্থ ফিরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সঠিক তথ্য জানাতে সকল তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও স্টক এক্সচেঞ্জকে চিঠি দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
গত ৫ নভেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ও সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডকে (সিডিবিএল) পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর বিতরণ না হওয়া লভ্যাংশের তথ্য জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে বিএসইসি। তিন কার্যদিবস অর্থাৎ ১০ নভেম্বরের (মঙ্গলবার) মধ্যে কমিশনে এ সংক্রান্ত তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে কমিশনের নির্বাহী পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, বিনিয়োগকারীদের সকল স্বার্থ সংরক্ষণের দায়িত্ব কমিশনের, সেই আলোকে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, ব্রোকারহাউজগুলো বিনিয়োগকারীদের খোঁজ নিলেই তাদের পেয়ে যাবে। আর যাদের পাবে না, তাদের অর্থ পুঁজিবাজারে কাজে লাগানো যাবে।
বিএসইসির তথ্য মতে, দাবিদারবিহীন লভ্যাংশের টাকা উদ্ধার করে তা দিয়ে মার্কেট মেকার ফান্ড কিংবা ইনভেস্টর প্রটেকশন ফান্ড গঠন করা যেতে পারে।
প্রতি বছর কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ। এরপর কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভায় পর্ষদের ঘোষিত লভ্যাংশ অনুমোদন করেন শেয়ারহোল্ডাররা।
নিয়ম অনুসারে লভ্যাংশ অনুমোদনের ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এই লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের কাছে পৌঁছাতে হয়। অনেক সময় শেয়ারহোল্ডারদের ব্যাংক হিসাব বা ঠিকানা ভুল থাকলে লভ্যাংশ যায় না। ফলে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯ এর ১১ ধারার ২ উপ-ধারা অনুযায়ী একটি আলাদা হিসাব খুলে ওই টাকা জমা রাখা হয়। যাতে করে পরবর্তীতে কোন শেয়ারহোল্ডার অভিযোগ করলে তা পূরণ করা যায়।