আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গ্রামীণফোন জানিয়েছে, সকল পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য বাণিজ্যিকভাবে এ প্যাকগুলোর সুবিধা দিতে দেশের প্রথম টেলিকম অপারেটর হিসেবে গ্রামীণফোনই ইউজিসির সাথে সমঝোতা চুক্তি করেছে।
টেলিকম অপারেটর প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বৈশ্বিক মহামারীর শুরু থেকে উদ্যোক্তা ও গ্রাহকদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ইনোভেটিভ কানেক্টিভিটি সল্যুশন প্রদানের জন্য গ্রামীণফোন বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গ্রামীণফোন ইতিমধ্যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাশ্রয়ী মূল্যে কাস্টমাইজড স্টুডেন্ট অনলাইন এডুকেশন প্যাক প্রদান করেছে। ইউজিসির সাথে সমঝোতা চুক্তির আওতায় বৈশ্বিক মহামারীর এ সময়ে পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে যে সব বিশ্ববিদ্যালয় তাদের শিক্ষার্থীদের ভার্চুয়াল ক্লাসের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে চান, তারা এ কাস্টমাইজড ও সাশ্রয়ী মূল্যের ডাটা প্যাক সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।
আজ বৃহস্পতিবার এক ভার্চুয়াল সভায় ইউজিসি ও গ্রামীণফোনের মধ্যে এ চুক্তি বিষয়ে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, ‘যেহেতু চলমান সঙ্কটটি দীর্ঘায়িত হচ্ছে আমরা দেখছি শিক্ষার্থীরা অনেকেই সাশ্রয়ীমূল্যে মানসম্পন্ন ইন্টারনেট পেতে চ্যালেঞ্জের সন্মুখীন হচ্ছেন। এমন একটি কঠিন পরিস্থিতিতে গ্রামীণফোন শিক্ষার্থীদের সাশ্রয়ীমূল্যে ইন্টারনেট প্যাকেজ নিয়ে ইতিবাচকভাবে এগিয়ে এসেছে।
আমরা এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। আমরা বিশ্বাস করি দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চমানের নেটওয়ার্ক অভিজ্ঞতা প্রদানে গ্রামীণফোন সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। শিক্ষাখাতের উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তি একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এখানে গ্রামীণফোনের সাথে সহযোগিতা ও উন্নয়নমূলক পার্টনারশিপ মূল্যবান ভূমিকা রাখবে। গ্রামীণফোনের সাথে এই উদ্যোগটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ যার সুবিধা বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের ভবিষৎ প্রজন্মের কাছে শিগগিরই পৌঁছাবে। জাতীয় দুর্যোগে দেশের শিক্ষাখাতের কার্যক্রম সক্রিয় রাখতে ইউজিসিকে সহায়তা করতে গ্রামীণফোনের মহৎ উদ্দ্যেশ্যকে আমরা আবারও সাধুবাদ জানাচ্ছি।’
গ্রামীণফোন বলছে, বৈশ্বিক মহামারী দেশের শিক্ষার্থীদের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। ৪ কোটি তরুণ-তরুণীর স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তা সত্ত্বেও, বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী অনলাইন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছে। ইতিমধ্যে, দেশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ডিজিটাল মডিউলে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। অন্যদিকে, অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো উপযুক্ত সল্যুশন খুঁজছে।
শিক্ষার্থীদের এ চ্যালেঞ্জগুলো বিবেচনা করে, গ্রামীণফোনের সাশ্রয়ী মূল্যের স্টুডেন্ট অনলাইন এডুকেশন প্যাক দিয়ে শিক্ষার্থীরা জুম (বিডিআরইএন -এর মাধ্যমে), মাইক্রোসফট টিমস, মিটস, জিমেইল ও গুগল সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহারের মাধ্যমে ভার্চুয়াল ক্লাসে অংশ নিতে পারবেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেও প্রবেশ করতে পারবেন।
স্টুডেন্ট কানেক্টিভিটি ছাড়াও, কেন্দ্রীয়ভাবে শিক্ষার্থীদের সংযুক্ত করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ব্রডকাস্টিং সলিউশনও (এসএমএস ও ভয়েস ব্রডকাস্ট) ব্যবহার করতে পারবে এবং সেন্ট্রালাইজড কন্ট্রোল প্যানেলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সিম ও ডাটা প্যাক ব্যবস্থাপনা করতে পারবে। এ চুক্তির আওতায়, নিজেদের ডিজিটাইজেশন ও অটোমেশনের যাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গ্রামীণফোনের পোর্টফোলিও থেকে বিস্তৃত পরিসরের ক্লাউড সার্ভিস, প্রোডাক্টিভিটি ও কোলাবোরেশন স্যুইট পছন্দ ও বাছাই করতে পারবে।
গ্রামীণফোনের চিফ বিজনেস অফিসার কাজী মাহবুব হাসান বলেন, ‘চলমান বৈশ্বিক মহামারী আমাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থার ওপর বিরুপ প্রভাব ফেলেছে। আমাদের বিশ্বাস অপ্রতিরোধ্য জাতি হিসেবে এ ভাইরাস মোকাবিলা করে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে পারবো। তবে এ সমস্যা যদি চলমান থাকে এবং আমাদের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রম ব্যহত হয় তাহলে আমরা সে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবো না। বিস্তৃত ফোরজি এলটিই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে গ্রামীণফোন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য অবশ্যই যোগাযোগ ও ডিজিটালাইজেশনের পূর্ণাঙ্গ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। এ ধরনের মহতী উদ্যোগে ইউজিসি’র পার্টনার হতে পেরে আমরা গর্বিত।
অর্থসংবাদ/এসআর