প্রায় ১০ মাস পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরেছে বাংলাদেশ। করোনায় বিপর্যস্ত নেপালকে হারাতে পারবে তো বাংলাদেশ? আর এত দিন পর মাঠে নামা জামাল ভূঁইয়া কেমন খেলবে? দুটি প্রশ্ন ছিল এই ম্যাচ নিয়ে। দুটি প্রশ্নের উত্তর দারুণ ফুটবল খেলেই দিয়েছে। মুজিব বর্ষ দুই ম্যাচের ফুটবল সিরিজের প্রথম ম্যাচে নেপালকে ২-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের শেষ জয়টি ছিল ২০১৫ সালে। নেপালকে ৫ বছর পর হারাল বাংলাদেশ।
নেপালের বিপক্ষে ৪-২-৩-১ ফরমেশনে খেলিয়েছেন কোচ জেমি ডে। স্ট্রাইকার সুমন রেজা ও গোলরক্ষক আনিসুর রহমানের অভিষেক হয়েছে আজ। প্রথমার্ধের পুরোটা সময় মাঠে ছিলেন আরেক অভিষিক্ত সুমন। স্ট্রাইকার হিসেবে নেপাল গোলরক্ষকের পরীক্ষা নিতে না পারলেও প্রেসিং করে কিছুটা আতঙ্ক ছড়িয়ে ছিলেন। সে সুযোগেই তাঁর পেছনে থেকে নম্বর টেন পজিশনে অনেকটা সহজে খেলার সুযোগ পেয়ে যান নাবীব। যতক্ষণ মাঠে ছিলেন, দারুণ খেলেছেন এই ফরোয়ার্ড।
১০ মিনিটে দুর্দান্ত এক গোলে বাংলাদেশের গোলের খাতা খোলা। ডান প্রান্ত থেকে সাদ উদ্দিনের দারুণ স্কিলের ফল পেয়েছে দল। ডান প্রান্তে প্রতিপক্ষের রক্ষণকে বোকা বানিয়ে ক্রস দিয়েছিলেন, খুব বেশি জায়গা পাননি, তবু সে অবস্থাতেই দারুণ এক ভলিতে গোল করেছেন নাবীব। গত বছর সেপ্টেম্বরে ভুটানের বিপক্ষে সর্বশেষ গোল করেছিলেন তিনি। সেদিনের মতো আজও নাবীবকে নম্বর টেন পজিশনে খেলিয়ে বাজিমাত করেছেন জেমি।
২১ মিনিটে আরও একটি গোলের সুযোগ এসেছিল বাংলাদেশের সামনে। জীবনের ক্রসে দূরের পোস্ট থেকে হেড করেছিলেন ইব্রাহিম। নেপাল ডিফেন্ডার তা ক্লিয়ার করেন। বাংলাদেশের দর্শকদের জন্য সবচেয়ে আফসোসের মুহূর্ত ছিল ২৬তম মিনিট। মিডফিল্ডার মানিকের দূরপাল্লার শট গোলরক্ষকের হাত ছুঁয়ে ক্রসবারে লেগে বাইরে চলে যায়।
গোলটি না পেলেও জামালের সঙ্গে ‘ডাবল পিভট’ হোল্ডিং মিডফিল্ডার হিসেবে দারুণ খেলেছেন মানিক। প্রস্তুতি ম্যাচে অন্য খেলোয়াড়দের ম্যাচের সুযোগ করে দেওয়ায় এই জুটিকে তুলে আতিকুর রহমান ও সোহেল রানা জুটিকে মাঠে পাঠান জেমি। আতিকুর ও সোহেল ছাড়া বদলি হিসেবে নামানো হয় মাহবুবুর রহমান সুফিল, ইয়াসিন খান ও বিপলু আহমেদকে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই সুমনের বদলি হিসেবে মাঠে পাঠানো হয় মাহবুবুরকে। ৭১ মিনিটে ব্যবধান ২-০ করেছেন দ্রুতগতির এই স্ট্রাইকারই। মাঝমাঠে থেকে আসা থ্রু বলে ট্রেডমার্ক গতি ও বলের নিয়ন্ত্রণে বক্সে প্রবেশ করেন। এগিয়ে আসা গোলরক্ষকের পাশ দিয়ে দারুণ বাঁকানো শট পাঠান জালে। নেপালও ম্যাচে ফেরার জন্য প্ল্যান ‘বি’তে গিয়েছিল। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে চায়নিজ তাইপের বিপক্ষে একমাত্র জয় পেয়েছে নেপাল। সে ম্যাচে জোড়া গোল করেছিলেন অন্যজন বিসটা। দ্বিতীয়ার্ধে লেফট উইং থেকে তাঁকে সরিয়ে এনে নম্বর টেন পজিশনে নিয়ে এসেছিলেন নেপাল কোচ। কিন্তু তপু-রিয়াদুল জুটির সামনে খুঁজেই পাওয়া যায়নি তাঁকে।