এনবিআরের চিঠিতে বলা হয়েছে, এইমস ফার্স্ট গ্যারান্টেড মিউচুয়াল ফান্ডটি মেয়াদি হওয়ার কারণে এরই মধ্যে স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে তালিকাচ্যুত হয়ে গেছে। বর্তমানে ট্রাস্টি বিজিআইসি ফান্ডটির ইউনিটহোল্ডারদের মধ্যে ফান্ডের অর্থ বণ্টনের প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ২(২৬) অনুসারে ওই ফান্ডের সঞ্চিত মুনাফা লভ্যাংশ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। আর আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ৫৪ ধারা অনুসারে উক্ত লভ্যাংশ প্রদানের ক্ষেত্রে বণ্টনকারী হিসেবে ট্রাস্টি কর্তৃক উৎসে কর কর্তন করতে হবে। এছাড়া যদি ফান্ডের ইউনিটহোল্ডারদের মধ্যে কোনো অনিবাসী ইউনিটহোল্ডার থাকে, তবে তাকে লভ্যাংশ প্রদানের আগের ৫৬ ধারায় উৎসে কর কর্তন করে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
ফান্ডটির ইউনিটহোল্ডার আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড কর্তৃক চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি তারিখে পাঠানো চিঠির উল্লেখ করে এনবিআর বলছে, দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হওয়ার কারণে এইমস ফার্স্ট গ্যারান্টেড মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দামে স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে কেনা হয়েছে। এতে অবসায়নের ক্ষেত্রে ইউনিট ফান্ডের নিজস্ব লভ্যাংশ পরিগণনা এবং সর্বশেষ ইউনিটহোল্ডারের মুনাফা সমান হবে না। একইভাবে ফান্ডটির প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি ইউনিটহোল্ডারের লভ্যাংশও সমান হবে না। এ কারণে ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি অবসায়ন মূল্য থেকে সর্বশেষ ইউনিটহোল্ডারের ক্রয়মূল্য বাদ দিয়ে লভ্যাংশ হিসাব করে এর ওপর উৎসে আয়কর কর্তন করতে হবে। তবে ক্রয় ছাড়া অন্য কোনোভাবে অর্জিত ইউনিটের ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী ইউনিটহোল্ডারের ক্রয়মূল্যই সর্বশেষ ইউনিটহোল্ডারের ক্রয়মূল্য হিসেবে বিবেচিত হবে। এ অবস্থায় এইমস ফার্স্ট গ্যারান্টেড মিউচুয়াল ফান্ডের অবসায়নের ক্ষেত্রে ইউনিটহোল্ডারদের লভ্যাংশ প্রদানের আগে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ৫৪ ও ৫৬ ধারা অনুসারে উৎসে কর কর্তন করে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়ার জন্য ট্রাস্টিকে অনুরোধ জানিয়েছে এনবিআর।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে অবসায়ন হওয়া এইমস ফার্স্ট গ্যারান্টেড মিউচুয়াল ফান্ডটির ট্রাস্টি নিরীক্ষা প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে এর ইউনিট মূল্য নির্ধারণ করা হয়। মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে ২ মার্চ ২০১৬ এর নিরীক্ষা প্রতিবেদন এবং ৩০ এপ্রিল ২০১৬ পর্যন্ত ফান্ডের নিট সম্পদ মূল্যায়ন প্রতিবেদন কিছু পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে অনুমোদন করে বিএসইসি। এক্ষেত্রে ট্রাস্টি কর্তৃক প্রদত্ত নিট সম্পদ মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুযায়ী ইউনিট মালিকদের মধ্যে বণ্টনের জন্য ইউনিটপ্রতি নিট অর্থের ২৫ টাকা ৯৩ পয়সা নির্ধারণ করা হয়। এক্ষেত্রে ফান্ডটির ইউনিটপ্রতি অভিহিত মূল্য ১০ টাকা ও অবসায়ন মূল্য ২৫ টাকা ৯৩ পয়সার মধ্যকার ব্যবধানকে লভ্যাংশ হিসেবে বিবেচনা করে এর ওপর আয়কর ধার্য করা হলে যেসব ইউনিটহোল্ডার আইপিওর পরে সেকেন্ডারি মার্কেট থেকে ফান্ডটির ইউনিট কিনেছিলেন, তাদের ক্ষতির সম্মুখীন হতে হতো। এ কারণে ইউনিটহোল্ডারদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর অবসায়ন মূল্য থেকে সর্বশেষ ক্রয়মূল্য বাদ দিয়ে লভ্যাংশ হিসাবের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একইভাবে ২০১৬ সালে অবসায়ন হওয়া গ্রামীণ ওয়ান স্কিম ওয়ান ফান্ডটির লভ্যাংশের বিষয়টি নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত এনবিআরের কাছ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।