চাঁবিপ্রবির প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণ বাতিল

চাঁবিপ্রবির প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণ বাতিল

নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের কারণে অবশেষে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চাঁবিপ্রবি) ভূমি অধিগ্রহণ বাতিল করেছে জেলা প্রশাসন।


সোমবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ভূমি অধিগ্রহণ বাতিল সম্পর্কে তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। তিনি বলেন, আমি চাঁদপুরে যোগদানের আগেই অধিগ্রহণ প্রস্তাব বাতিল করা হয়েছে।

জানা গেছে, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৬২ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের আলোচিত চেয়ারম্যান সেলিম খান জোরপূর্বক অনেক পরিবারকে জমি বিক্রি করতে বাধ্য করেন। এছাড়া জমির দাম বাজার দরের চাইতে অনেক কমে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। গণমাধ্যমের খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত ভূমি অধিগ্রহণ বাতিল করে প্রশাসন।


ভূমি অধিগ্রহণ বাতিলের খবরে আনন্দিত জমির মালিকরা।


ভুক্তভোগী জমির মালিক কালু খান বলেন, আমি জমি দিতে রাজি হইনি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় করার নাম করে আমার প্রায় ৫০ শতাংশ জমি জোরপূর্বক নিয়ে যান সেলিম খান। লোকজন দিয়ে আমাকে ধরে এনে এবং অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জমি লিখে নিয়েছিলেন সেলিম চেয়ারম্যান। সে সময় দাম হয় ৩৭ লাখ টাকা। কিন্তু তিনি আমাকে দেন ১২ লাখ টাকা। আমি আমার জমি ফেরত চাই।


লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. কাজল ও হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের বসতভিটা ছিল সেখানে। দীপু মনির প্রভাব খাটিয়ে আমাদের সেই ভিটা থেকে উচ্ছেদ করে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য করেন সেলিম চেয়ারম্যান। কিন্তু এখন তো আর বিশ্ববিদ্যালয় হলো না। আমাদের জমি ফেরত চাই।


ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, সেলিমের দাপটে এলাকার বহু পরিবারকে নিজের বাপ-দাদার বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য বহু বসতভিটা ও ফসলি জমি বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। ওইসব জমি এখন পড়েই আছে। কিছুই হয়নি এই কয় বছরে।


এদিকে চাঁদপুর শহরের ওয়াবদা গেট খলিশাডুলি এলাকায় অস্থায়ী ক্যাম্পাসে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে।


স্থায়ী ক্যাম্পাস দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. সিয়াম ও নিহাল বলেন, তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও তার ভাইয়ের দুর্নীতি কারণে সরকার ভূমি অধিগ্রহণ বাতিল করে দিয়েছে। যতদ্রুত সম্ভব বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের ব্যবস্থা করাসহ জমি বরাদ্দ দেওয়া হোক।


এবিষয়ে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, অনিয়ম ও দুর্নীতি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। শিগগিরই নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। আগে যে স্থানে ভূমি অধিগ্রহণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে তা বাতিল করা হয়েছে। ওই জায়গায় আর বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে না।


তবে বিশ্ববিদ্যালয় কোথায় হবে প্রশ্নে তিনি বলেন, নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা মন্ত্রণালয় থেকে কোনো নির্দেশনা পাইনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা পেলে আমরা নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য কাজ করব।


প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১৯ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। সংসদে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে বিল পাস হয় ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। ২০২৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে তিন বিভাগের দুই ব্যাচে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৮০ জন।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক এমটিও পার্টনারদের নিয়ে বিকাশে কর্মশালা
পাঠাও নিয়ে এলো মার্চেন্টদের জন্য পেমেন্টের দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য সমাধান ‘ইনস্টাপে’
চট্টগ্রাম ও বরিশালে বিকাশ-বিজ্ঞানচিন্তা’র আয়োজনে ‘বিজ্ঞান উৎসব’
সনি এক্সপোর মেয়াদ বাড়লো দুই দিন
নীলফামারী অঞ্চলে ব্র্যাক ব্যাংকের এজেন্ট মিট আয়োজন
বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নে এফআইসিজিএসে অংশ নিলো কমিউনিটি ব্যাংক
রাজশাহীতে কমিউনিটি ব্যাংকের মাধ্যমে ট্রাফিক মামলার ফাইন কালেকশন উদ্বোধন
এবি ব্যাংকের উদ্যোক্তা উন্নয়ন কর্মসূচির সমাপনী ও সনদ বিতরণ
রোটারি ক্লাব অব ঢাকা মেগা সিটির প্রেসিডেন্ট হ্যান্ডওভার
মাসুমা রহমান নাবিলার সঙ্গে ভিট বাংলাদেশের চুক্তি