ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইটিএফসি), ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন অফিস-কানাডা (টিএফও কানাডা) ও বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (বিপিসি) এ তিনটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এই সনদপত্র প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়।
শনিবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী। এসব প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রধান নির্বাহী, প্রেসিডেন্ট, গবেষক, ব্যবস্থাপক, উপ-পরিচালকসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা এই প্রশংসাপত্র গ্রহণ করেন।
পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনস্টিটিউট (বিএফটিআই), বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (বিপিসি), ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো (ইপিবি), এসএমই ফাউন্ডেশন (এসএমইএফ), ওমেন এন্টারপ্রেনার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডব্লিওইএবি) এবং ওমেন এন্টারপ্রেনার নেটওয়ার্ক ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিওইএনডি)।
শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, ব্যবসা উন্নয়নে ভূমিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আগ্রহী ৬০ জনের মধ্য থেকে ৩২ জনকে অনলাইন প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচন করা হয়। প্রশিক্ষণ চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে শুরু হয়ে শেষ হয় অক্টোবরে। পরে মানদণ্ডের ভিত্তিতে ৯টি প্রতিষ্ঠানের চূড়ান্তভাবে ২৯ জনকে নির্বাচন করা হয়।
নির্বাচিত এই প্রশিক্ষকরা ভবিষ্যতে দেশের সম্ভাবনাময় ব্যবসা-উদ্যোক্তাদের বাণিজ্যে সম্প্রসারণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশে যাবতীয় পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করবেন।
দেশের বিজনেস কনসালট্যান্ট প্রতিষ্ঠান-লাইট ক্যাসল পাটনার্স আয়োজিত এই সনদপত্র প্রদান অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান, রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান, বিপিসি’র সমন্বয়ক এ এইচ এম শফিকুজ্জামান প্রমুখ।
এছাড়া অনলাইন প্লাটফর্ম জুমে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার বেনোইট প্রিফনটেইন, আইটিএফসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হানি সলেম সনবল, টিএফও-কানাডার নির্বাহী পরিচালক স্টিভ টিপম্যান।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী বলেন, ‘এটা সত্য যে, করোনা মহামারি অর্থনীতিতে কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করেছে। এই পরিস্থিতিতে এসএমই খাত ও নারী উদ্যোক্তারা আমাদের জন্য বড় সম্ভাবনা হয়ে উঠেছে। তাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রয়াসের কারণে অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। এ ধরনের প্রশিক্ষণ ব্যবসায় দক্ষতা উন্নয়নে সহায়তা করবে বলে আমি আশা করছি।’
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি কানাডা তার নিজ দেশে প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছে। এটা আমাদের জন্য একটা সম্ভাবনা তৈরি করেছে। কারণ, প্লাস্টিক পণ্যের বিকল্প হিসেবে কানাডায় পাটজাত পণ্যের চাহিদা বাড়বে। এতে বাংলাদেশের সামনে এ খাতের রফতানির সুযোগ আরও সম্প্রসারিত হবে বলে আমি আশা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে কানাডা থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশের রফতানি আয় এক বিলিয়ন ডলার। এটাকে আগামী তিন বছরে আমরা দ্বিগুণ করতে চাই। সেটা করতে হলে এসএমই ও নারী উদ্যোক্তাদের সম্ভাবনাকে আরও কাজে লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি উপযুক্ত প্রশিক্ষণ জরুরি।
বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার বেনোইট প্রিফনটেইন বলেন, ‘বাণিজ্য সম্প্রসারণে বেসরকারি খাতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত এসএমই, অ্যাগ্রো ফুড প্রসেসিং শিল্পে বাংলাদেশের সম্ভাবনা উজ্জ্বল।
কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের বাণিজ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বাস্তবমুখী প্রশিক্ষণের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।
উল্লেখ্য, ‘এক্সপোর্ট লঞ্চপ্যাড বাংলাদেশ’ হচ্ছে একটি সহায়তাভিত্তিক কর্মসূচি, যার মূল উদ্দেশ্য দেশের সম্ভাবনাময় ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের বাণিজ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বাজার প্রবেশে সহায়তা করা। আইটিএফসি, টিএফও কানাডা ও বিপিসি’র সহযোগিতায় লাইট ক্যাসল পাটনার্স এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।