রিপোর্টে বলা হয়েছে, একজন মানুষের নাম ব্যবহার করে তার ধর্ম ও জাতিগত পরিচয়কে শনাক্ত করা হয়। এভাবে যুক্তরাজ্যে এক কোটি ভোটারের তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে। অধিকাংশই জানেন না তাদের তথ্য ঠিক কীভাবে কাজে লাগানো হয়েছে। যে কোনো দেশেই রাজনৈতিক দলগুলো ভোটারদের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে কার্যকরী প্রচারণা চালানোর জন্য। কিন্তু বর্তমান সময়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ডাটা অ্যানালিটিকস সফটওয়্যার বিভিন্ন উৎস থেকে কোনো ব্যক্তি সম্পর্কে নানা তথ্য জড়ো করে তার রাজনৈতিক ভাবনা কিংবা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ধারণা তৈরি করতে পারে। এটা যেকোনো মানুষের জন্য উদ্বেগের। আর তাই প্রাইভেসি ইন্টারন্যাশনালের লুসি পার্ডন বলেছেন, ডাটা সংগ্রহের বিষয়টি মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে এবং এর সীমারেখা নির্দিষ্ট করা প্রয়োজন।
প্রাইভেসি ইন্টারন্যাশনাল বলছে, যুক্তরাজ্যে ভোটারদের ডাটা বিভিন্ন উৎস থেকে সংগ্রহ করে প্রোফাইলিং করা হচ্ছে। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো এ ডাটা কীভাবে ব্যবহার করছেন সেটা কেউ জানে না। এখানে নাম এসেছে ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি এক্সপেরিয়ানের। তারা বিভিন্ন উৎস থেকে যেমণ ক্রেডিট কার্ড কোম্পানি থেকে ডাটা সংগ্রহ করে। তারপর সেই ডাটা রাজনৈতিক দল থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করে। আইসিও দেখেছে গত দুই বছরে যুক্তরাজ্যে কয়েক মিলিয়ন মানুষের ডাটা নিয়ে কাজ করেছে এক্সপেরিয়ান।
এখন যে প্রশ্নটি উঠবে তা হলো এ ডাটা রাজনৈতিক দলের কী কাজে লাগে? প্রথমত, এর মাধ্যমে কোনো রাজনৈতিক দল তাদের নির্দিষ্ট রাজনৈতিক বার্তা সেই ব্যক্তিকে বারবার পাঠাতে পারে। এর মাধ্যমে কোনো ভোটার প্রভাবিত হতে পারেন। প্রাইভেসি ইন্টারন্যাশনালের মতে, এর মাধ্যমে ভোটারদের মধ্যে মেরুকরণ হয় এবং রাজনৈতিক বিতর্ক সীমিত হয়ে আসে। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ জিম কিলক বলেছেন, ‘ধরুন কারো নাম আহমেদ। এতে ধারণা করা যেতে পারে সে কোন অভিবাসী পরিবারের সদস্য। ফলে তার কাছে অভিবাসন নিয়ে কোনো নেতিবাচক বার্তা কোনো রাজনৈতিক দল পাঠাবে না।
কনজারভেটিভ, লেবার এবং লিবারেল ডেমোক্র্যাটদের কাছে বিবিসি ভোটারদের ডাটা সংগ্রহ ও ব্যবহার বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছে। কোনো দলই জবাব দেয়নি। দ্য অর্গ নিজেদের মতো অনুসন্ধান চালিয়েছে। তারা দেখেছে লেবার পার্টি একজন ভোটারের ১০০ পাতার সমান ডাটা সংগ্রহ করেছে। এসব ডাটাকে তারা ৮০টি ক্যাটাগরিতে ভাগ করেছে। লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা নামের ওপর ভিত্তি করে তার বয়স ও কোন বাসায় কতটি পরিবার আছে, সেসব তথ্য অনুমানের জন্য ডাটা বিশ্লেষণ করেছে। কনজারভেটিভরা দেখেছে কোন ব্যক্তি কতক্ষণ ডেইলি মেইল পড়েন আর অনুমান করতে চেয়েছে তার আয়।
দ্য অর্গ রাজনৈতিক দলগুলোকে আরো জিজ্ঞাসা করেছে যে ২০১৯ সালের নির্বাচনে তারা যুক্তরাজ্যের নির্বাচনের সময় ডাটা ব্রোকার সার্ভিস ব্যবহার করেছে কিনা। লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা বলেছে তারা এমন কিছু করেনি। লেবার পার্টি কোনো জবাব দেয়নি। আর কনজারভেটিভরা বলেছে তার বাণিজ্যিকভাবে পাওয়া যায় এমন ডাটা কিনেছে, তবে সেগুলো কীভাবে ব্যবহার করেছে সে সম্পর্কে কিছু বলেনি।
যুক্তরাজ্যের ইনফরমেশন কমিশনারের অফিস (আইসিও) বলেছে ভোটারদের ব্যক্তিগত ডাটা তারা কীভাবে ব্যবহার করেন সে বিষয়ে তাদের পরিষ্কার বক্তব্য থাকা প্রয়োজন। কিন্তু ওপেন রাইটস গ্রুপ মনে করে এ বিষয়ে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
সূত্র: বিবিসি
অর্থসংবাদ/এসএ/২৩:০৫/১১:২৯:২০২০