ফিফা বর্ষসেরার শীর্ষ তিনজনের মধ্যে যে বায়ার্ন মিউনিখের পোলিশ ফরোয়ার্ড রবার্ট লেফানডফস্কি থাকবেন, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ ছিল না। আগ্রহ ছিল, বাকি দুই জায়গায় কাকে নেয় ফিফা, সেটা নিয়ে।
এই আলোচনায় পিএসজিকে তাদের ইতিহাসের প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে তোলা ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমার যেমন ছিলেন, ছিলেন বায়ার্নে লেফানডফস্কির সতীর্থ মানুয়েল নয়্যার, ছিলেন লিভারপুলকে ৩০ বছর পর লিগ জেতাতে ভূমিকা রাখা মোহাম্মদ সালাহ কিংবা সাদিও মানে, মিডফিল্ডে সিটির হয়ে দুর্দান্ত খেলা কেভিন ডি ব্রুইনা, রক্ষণ থেকে আক্রমণ—সব জায়গায় রিয়াল মাদ্রিদের স্প্যানিশ লিগ জেতায় ভূমিকা রাখা অনুপ্রেরণাদায়ী অধিনায়ক সের্হিও রামোস।
এই কজনের তুলনায় মেসি বা রোনালদো অত ভালো মৌসুম কাটাননি। মেসি তো লিগ বা চ্যাম্পিয়নস লিগের কিছুই জেতেননি, ওদিকে রোনালদো লিগ জিতলেও ইতালিয়ান লিগের সেরা খেলোয়াড়ের দৌড়ে সতীর্থ পাওলো দিবালাই তাঁকে পেছনে ফেলেছিলেন।
কিন্তু শেষমেশ নেইমারদের কাউকে নয়, বরং লেফানডফস্কির সঙ্গী ফিফার বর্ষসেরার মনোনয়নের সেরা তিনে মেসি আর রোনালদোকেই মনে ধরেছে ফিফার, যা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে সব জায়গায়। সে সমালোচনার পালে হাওয়া দিয়েছেন নেইমারই।
ফিফার দিক থেকে সেরা তিনের ঘোষণা আসার কিছুক্ষণ পরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে ইঙ্গিতবাহী তিনটি টুইট করেন নেইমার। নিজেকে শার্লক হোমস কিংবা ফেলুদার মতো অনুসন্ধিৎসু ভেবে থাকলে এমন মনে হতেই পারে যে এমন টুইট করে পরোক্ষভাবে ফিফাকেই একহাত নিয়েছেন এই ব্রাজিল তারকা। কিন্তু কী লেখা ছিল টুইট দুটিতে?
প্রথম টুইটে নেইমার লিখেছেন, ‘টেনিসে কিছু করতে পারলাম না, তাই বাস্কেটবল খেলতে চলে যাচ্ছি।’ ছয় মিনিট পর আরেকটা পোস্ট দেন নেইমার। সেখানে লেখেন, ‘আমি এর মধ্যেই বাস্কেটবল খেলা ছেড়ে দিয়েছি, আমি এখন গেমার।’ অনেকের ধারণা, নেইমারের ইঙ্গিতটা এই যে, তিনি ফুটবল খেলেন না। ফুটবল খেললে তাঁকে ঠিকই এমন মৌসুমের পর ফিফার বর্ষসেরার তালিকার সেরা তিনে রাখা হতো।
কয়েক ঘন্টা আগে নেইমার আবার টুইট করেছেন। সেটিতে লেখা, ‘সত্যিই এমনটা হয়েছে?’
নেইমারের বাবা আবার অত রাখঢাকের মধ্য দিয়ে যাননি। ছেলের সমর্থনে বেছে নিয়েছেন ইনস্টাগ্রাম। সেখানেই সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন নিজের মনের কথা, ‘আমাদের কাছে তুমি সব সময় সেরা লিগে খেলার মতো, সেরা ক্লাবের হয়ে খেলার মতো, সেরা খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলার মতো যোগ্যতাসম্পন্ন খেলোয়াড় হয়েই থাকবে।’
চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে তো উঠেছেই, পাশাপাশি ফরাসি লিগসহ গত মৌসুমে ঘরোয়া দুটি কাপই জিতেছে নেইমারের পিএসজি। যদিও বায়ার্নের কাছে হেরে প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগের স্বপ্ন পূরণ হয়নি নেইমারদের।
লিগে গত মৌসুমে ১৫ ম্যাচে ১৩ গোল করেছেন নেইমার, এবার ৬ ম্যাচে ৩ গোল। চ্যাম্পিয়নস লিগে গত মৌসুমে নেইমারের গোল ছিল ৭ ম্যাচে ৩টি, এবার ৫ ম্যাচে ৬টি! হয়তো গত মৌসুমে ফরাসি লিগ পুরোপুরি শেষ না হওয়াই নেইমারের কপাল পুড়িয়েছে।