স্বাধীনতা স্মারক ভাস্কর্যে পুস্পার্ঘ অর্পণের মাধ্যমে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এবং তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া-মুনাজাত শেষে আয়োজিত ‘বিজয় দিবস শীর্ষক’ আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য বক্তব্য রাখেন।
উপাচার্যের কার্যালয়ে কর্মরত ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. জাহাঙ্গীর আলম অনুষ্ঠানের জন্য ব্যানার প্রস্তুত করেন। ব্যানারে জাতীয় প্রাসঙ্গিকক্রমে স্মৃতি সৌধের ছবি ব্যবহার করার কথা থাকলেও শহীদ মিনারের ছবি দিয়ে ব্যানার তৈরি করে অনুষ্ঠানে নিয়ে আসেন এবং কাউকে না দেখিয়ে অনুষ্ঠানস্থলে অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়ে উক্ত ব্যানার উপস্থাপন করেন। অনাকাঙ্খিতভাবে সঠিক ছবি ব্যবহার না করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্যসহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সিনেট, সিন্ডিকেট সদস্যগণসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ ক্ষুব্ধ হন এবং সাথে সাথেই ঐ ব্যানার সরিয়ে ফেলা হয়।
উল্লেখ্য, মো. জাহাঙ্গীর আলম বিগত দুইজন উপাচার্যের দায়িত্বকালীন উপাচার্য দপ্তরে ডেপুটি রেজিস্ট্রার (পি.এস টু ভিসি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কর্মরত থাকার ধারাবাহিকতায় বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার দায়িত্ব গ্রহণ করার পরে তিনি একইপদে বহাল ছিলেন। তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞতার উপর নির্ভরতার কারণেই অনাকাঙ্খিত এ ভুল হয়েছে, যার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে দুঃখিত ও লজ্জিত।
এ প্রসঙ্গে মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বলেন, “আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা ধরণের ষড়যন্ত্র চলছে। এ সকল ঘটনাগুলোও সেই ষড়যন্ত্রের অংশ। প্রশাসনে কোন ধরণের অনিয়ম গ্রহণযোগ্য নয়। আমি আমার জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে অনিয়মের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হলে একজন দায়িত্বশীল উপাচার্য হিসেবে স্বপরিবারে আমি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করি এবং কোভিড-১৯ এর কারণে লকডাউন চলাকালীন ক্যাম্পাসে অবস্থানরত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশে থেকে দাপ্তরিক কাজ সচল রাখি। কাজ করতে গিয়ে নিজে স্বপরিবারে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছি এর ফলে হারিয়েছি নিজের মুক্তিযোদ্ধা স্বামীকে।
তিনি আরো বলেন, আমার সমস্ত ত্যাগের বিনিময়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নিবেদিত দায়িত্বশীল প্রশাসন গড়ে তোলার মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনিয়মের মূলউৎপাটনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি আমার আহবান, আপনারা আপনাদের দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়ে শ্রম ও মেধার সমন্বয় ঘটিয়ে দেশের উন্নয়নে অংশীজন হোন।”
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করায় ও প্রশাসনিক দায়িত্বে অবহেলার কারণে ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোঃ জাহাঙ্গীর আলমকে স্ট্যান্ড রিলিজের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (পি.এস টু ভিসি)-এর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করে অন্য অফিসে বদলী করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ভবিষ্যতে এ ধরণের অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়ানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সজাগ থাকবে।