রোহিঙ্গা ইস্যুতে কাতারের প্রতিমন্ত্রী বলেন, তার দেশ এই ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আবারও রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের অর্থনীতির ‘বোঝা’ হিসাবে উল্লেখ করেন। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘তারা (রোহিঙ্গারা) আমাদের অর্থনীতির বোঝা এবং আমরা এই বিশাল সংখ্যক মিয়ানমার নাগরিককে আমাদের দেশে কতদিন রাখব?’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘মিয়ানমার বাংলাদেশ থেকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হলেও সে অনুযায়ী কাজ করেনি।’
প্রেস সচিব বলেন, সাদ আল-মুরাইখি দু’দেশের মধ্যে শিক্ষাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ‘অনুসন্ধান করা হয়নি এমন অনেক ক্ষেত্র রয়েছে যা অর্থনৈতিক সহযোগিতার জন্য অনুসন্ধান করতে হবে।’
বাংলাদেশে কাতারের প্রতিমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মুসলিম দেশগুলোর সাথে আমাদের সম্পর্ককে গুরুত্ব দিই এবং আমরা একসাথে উন্নয়নের ক্ষেত্রগুলো খুঁজে দেখতে পারি।
প্রধানমন্ত্রী দু’’দেশের পারস্পরিক স্বার্থে বাংলাদেশে কাতারের আরও বিনিয়োগ কামনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা দেশজুড়ে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছি। কাতারের উদ্যোক্তারা এই অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ করতে পারেন।’
শিক্ষা উন্নয়নের চাবিকাঠি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার শিক্ষা খাতের উন্নয়নে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দেশে দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য প্রযুক্তিগত এবং বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিচ্ছি।’
দারিদ্র্যমুক্ত দেশ প্রতিষ্ঠার জন্য তাঁর সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার দারিদ্র্যের হারকে ২০.৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের বিভিন্ন বাস্তবমুখী পদক্ষেপের কারণে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮-১৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
শেখ হাসিনা কাতারের আমিরকে ‘মুজিব বর্ষে’ বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, ‘জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের সময় আমরা তাকে স্বাগত জানাতে পারলে আনন্দিত হবে।’ কাতারের প্রতিমন্ত্রী গত এক দশকে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আমরা আপনার উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন অনুসরণ করছি।’
সাদ আল মুরাইখি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে স্বল্পোন্নত থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণেরও প্রশংসা করেন। কাতারের প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা চান বাংলাদেশ এ অঞ্চল এবং মুসলিম বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করুক। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্যদের হস্তক্ষেপ চাই না। আপনি এ ক্ষেত্রে মুসলিম বিশ্বের প্রতীক।’
বৈঠকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস এবং ঢাকায় কাতারের রাষ্ট্রদূত আহমেদ মোহাম্মদ নাসের আল-দেহাইমি উপস্থিত ছিলেন।