পুলিশ বলছে, এই গোপন সুড়ঙ্গপথে যাতায়াত ছিল দুই দেশের সীমান্তের আন্তর্জাতিক চোরাকারবারি আর দুষ্কৃতকারীদের। সীমান্তের চোরাচালান, মানব পাচারের বিচরণক্ষেত্র ছিল এটি। করিমগঞ্জ জেলার নিলামবাজার থানা এলাকার মধ্যে পড়েছে এলাকাটি।
গত রোববার নিলামবাজার থানার সীমান্তের শিলুয়া গ্রামের বাসিন্দা দিলোয়ার হোসেনকে একটি বিয়েবাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে পার্শ্ববর্তী নয়াগ্রামের এলিম উদ্দিন তাঁকে ডেকে নিয়ে যান। তাঁকে জঙ্গলের ওই সুড়ঙ্গপথ দিয়ে নিয়ে যান এলিম উদ্দিন। এরপরই দিলোয়ার হোসেনের বাড়িতে ফোন আসে মুক্তিপণের। বলা হয়, দিলোয়ার হোসেনকে পেতে হলে অবিলম্বে দিতে হবে পাঁচ লাখ টাকা। আর তা দিতে হবে নয়াগ্রামের বাসিন্দা এলিম উদ্দিনের কাছে। দেখা যায়, ওই ফোন বারবার এসেছে বাংলাদেশের একটি নম্বর থেকে। এরপরই দিলোয়ার হোসেনের বড় ভাই ছুটে আসেন নিলামবাজার থানায়। গত বুধবার অপহরণের অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। দিলোয়ারের পরিবারও পুলিশের পরামর্শে বারবার মুক্তিপণের টাকা কমানোর আবেদন করলেও তাতে সায় দেয়নি অপহরণকারীরা।
অবশেষে তদন্তে নামেন করিমগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার ময়ঙ্ক কুমার ঝাঁ। তিনি চলে আসেন ওই সুড়ঙ্গপথের সন্ধানে। সঙ্গে নেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জ্যোতি রঞ্জন দেবনাথ এবং নিলামবাজার থানার সিআই আনোয়ার হোসেনকে। এর আগেই একপর্যায়ে গ্রেপ্তার করেন এলিম উদ্দিনকে। তাঁকে জেরা করে জানা যায় এই সুড়ঙ্গপথের কথা।
খবরটি চলে যায় ওপারের দুষ্কৃতকারীদের কানে। অগত্যা দুষ্কৃতকারীরা ছেড়ে দেয় দিলোয়ার হোসেনকে। দিলোয়ার হোসেন ছাড়া পেয়ে পুলিশকে সব ঘটনা জানান। পুলিশও তাজ্জব হয়ে যায়। এই জঙ্গলে ২০০ মিটার লম্বা সুড়ঙ্গপথের কথা তাদের জানাই ছিল না। একেবারে জঙ্গলের মধ্যে অবস্থান ছিল এই সুড়ঙ্গপথের। একটু দূরেরই ছিল সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া। এসবের মধ্যেই ছিল এই গোপন সুড়ঙ্গপথ।
এ ঘটনার পর পুলিশ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে (বিএসএফ) জানায় এই গোপন সুড়ঙ্গপথের কথা। বিএসএফ এসে এই সুড়ঙ্গপথের ভারতীয় অংশের মুখ বন্ধ করে দেয়। গ্রেপ্তার করা হয় এলিম উদ্দিনকে। পুলিশ বলেছে, অচিরেই এই আন্তর্জাতিক দুষ্কৃতকারীদের গ্রেপ্তার করা হবে।