অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন নিয়ে কোনও ধরনের কথা না হলেও কোভ্যাক্সিনের অনুমোদন নিয়ে তুমুল বিতর্ক চলছে। কারণ এই ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল এখনও শেষ হয়নি, নেই সুরক্ষা সংক্রান্ত পর্যাপ্ত তথ্যও।
কোভ্যাক্সিন নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন উঠতে শুরু করার পর পরই এই ভ্যাকসিন নিয়ে দেশের মানুষকে আশ্বাস দিয়েছেন দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অব মেডিক্যাল সাইন্সেসের (এইমস) পরিচালক ডা. রণদীপ গুলেরিয়া।
এক সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, কেউ কোভ্যাক্সিন নেওয়ার পর কোনও ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে এজন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। সম্প্রতি ব্রিটেনে নতুন ধরনের করোনার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। ভারতসহ বেশ কিছু দেশেও নতুন ধরনের এই ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। নতুন ধরনের এই করোনার সংক্রমণ বেড়ে গেলে কোভ্যাক্সিনের ব্যবহার ব্যবহার শুরু করবে ভারত। তবে তা তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের পরই। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সময়ও কারও এই ভ্যাকসিন গ্রহণের পর কোনও ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় দেখা দিলে এর ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সাধারণ মানুষকে এই ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হওয়ার পরও একই ধরনের ব্যবস্থা থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
কোভ্যাক্সিন এখনও পর্যন্ত এর তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শেষ করেনি। তারপরেও কিভাবে এই ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেওয়া হলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কংগ্রেস নেতা শশী থারুরের দাবি, চটজলদি কোভ্যাক্সিনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, কোভ্যাক্সিন নিয়ে সাধারণ মানুষের আশঙ্কা দূর করতে এই টিকার ট্রায়াল ও তার ফলাফল সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করতে হবে বলে দাবি জানিয়েছেন সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরি। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, কোনও রকম সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিলে তার ফল ভোগ করতে হবে সাধারণ মানুষকে।
কোভ্যাক্সিন নিয়ে তৈরি হওয়া বিতর্ক নিয়েও মুখ খুলেছেন রণদীপ গুলেরিয়া। তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন নিয়ে কোনও ধরনের রাজনীতি কাম্য নয়। বিজ্ঞানীরা রাজনীতি জানেন না। তারা অক্লান্তভাবে ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করে চলেছেন। নতুন ধরনের করোনার বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনের কাজ করার সম্ভাবনা খুবই বেশি।’
এদিকে, ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই) ভি জে সোমানি দাবি করেছেন, প্রায় আট হাজার অংশগ্রহণকারীর ওপর প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে কোভ্যাক্সিন ভালো ফলাফল দেখিয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ২৫ হাজার ৮০০ জন স্বেচ্ছাসেবকের মধ্যে ইতোমধ্যেই ২২ হাজার ৫০০ জনকে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। সেই তথ্য অনুযায়ী কোভ্যাক্সিনকে আপাতত নিরাপদ বলেই মনে করা হচ্ছে।
ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগেই ভ্যাকসিনটির অনুমোদনের পক্ষে সাফাই গেয়ে এ কর্মকর্তা বলেন, সুরক্ষা নিয়ে ন্যূনতম দুশ্চিন্তা থাকলে আমরা কোনও কিছুর অনুমোদন দিতাম না। ভ্যাকসিনগুলো ১১০ শতাংশ নিরাপদ। তবে এই কথায় সন্তুষ্ট হতে পারেননি অনেকেই। সমালোচকদের মতে, কোভ্যাক্সিনকে আগেভাগেই অনুমোদন দিয়ে বড় ভুল করেছে ভারত সরকার।