উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব ড. আহমেদ কায়কাউস, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী।
বাংলাদেশ সরকার সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় প্রতিবছর দুস্থদের মাঝে হাজার হাজার কোটি টাকার ভাতা বিতরণ করে থাকে। সরকার থেকে ব্যক্তিকে (জি-টু-পি) পাঠানো এ সহায়তা কার্যক্রমে ইতোমধ্যে ২১টি জেলার ৭৭টি উপজেলায় ১২ লাখ ৩৭ হাজার উপকারভোগীর কাছে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভাতার অর্থ বিতরণ করেছে।
বাকি ৭৬ লাখ ১৩ হাজার উপকারভোগীকে টাকা পৌঁছে দেবে ‘নগদ’ ও অপর একটি এমএফএস। এই পদ্ধতিতে ভাতা বিতরণের জন্য গত বছরের শেষের দিকে সরকার আট বিভাগের আটটি ইউনিয়নে ডেমো করে। যার ভিত্তিতে সরকার ‘নগদ’-এর মাধ্যমে ভাতার ৭৫ শতাংশ বিতরণের সিদ্ধান্ত নেয়। ‘নগদ’-এর বিতরণ করা এই ৭৫ শতাংশ উপকারভোগী দেশের ৪০টি জেলার বাসিন্দা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সবচেয়ে নিরাপদে সরকারি ভাতা জনগণের মাঝে বিতরণের ক্ষেত্রে ‘নগদ’ একটি উদহারণ তৈরি করবে। ‘নগদ’-এর উপর সরকারের আস্থার প্রতিদান হিসেবেই দুস্থদের মাঝে ভাতা বিতরণে তিন-চতুর্থাংশ ভাতা ‘নগদ’ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে।
সরকারি এই ভাতা ক্যাশআউট করতে উপকারভোগীকে অতিরিক্ত কোনো অর্থ খরচ করতে হবে না। সরকার মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অপারেটর ‘নগদ’-কে প্রতি হাজারে ৭ টাকা ক্যাশআউট চার্জ দেবে, বাকি টাকা ‘নগদ’ বহন করবে। যার ফলে সরকারি ভাতা ক্যাশ-আউট করতে ভাতাভোগীকে কোনো অতিরিক্ত টাকা খরচ করতে হবে না।
চলতি বছর সরকার মোট চারটি কর্মসূচির আওতায় এই ভাতা প্রদান করবে, যেখানে সরকারের মোট বাজেট বরাদ্দ রয়েছে পাঁচ হাজার ৮৮৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। এই চারটি কর্মসূচির মধ্যে বয়স্কভাতাভোগী ব্যক্তির সংখ্যা ৪৯ লাখ, যেখানে সরকারের বরাদ্দ দুই হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। বিধবা ও স্বামী নিগৃহিতা ভাতাভোগীর সংখ্যা ২০ লাখ ৫০ হাজার, যাদের জন্য সরকারি বরাদ্দ এক হাজার ২৩০ কোটি টাকা।
১৮ লাখ অসচ্ছল প্রতিবন্ধীদের জন্য সরকারি ভাতা বরাদ্দ রয়েছে এক হাজার ৬২০ কোটি টাকা। এছাড়া এক লাখ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ৯৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা শিক্ষা উপবৃত্তি প্রদান করবে সরকার। এই চারটি খাতে ৮৮ লাখ ৫০ হাজার মানুষের বিপরীতে সরকার পাঁচ হাজার ৮৮৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা বিতরণ করবে।
এর আগে করোনা মহামারির সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫০ লাখ অসহায় পরিবারকে এমএফএস-এর মাধ্যমে ঈদ উপহার বিতরণ করেন। যার মধ্যে ১৭ লাখ পরিবারের ‘নগদ’-এর মাধ্যমে উপহার পেয়েছিলেন।