একই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অবস্থান তুলে ধরেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম।
আজ মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চে হাজির হয়ে তারা লিখিত আকারে এ মত তুলে ধরেন।
খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ তার অভিমতে বলেছেন, আমানতকারীরা টাকা পাবেন। তাদের টাকা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। পি কে হালদারসহ কয়েকজন ব্যক্তি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে প্রায় ১৫৯৬ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে। এই টাকা কোথায় গেছে তার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।
এর আগে পিপলস লিজিংকে অবসায়ন করা হয়েছে। এখন যদি ইন্টারন্যাশনাল লিজিংকেও অবসায়ন করা হয় তাহলে এ সেক্টরে বিরুপ প্রভাব পড়বে।
তিনি বলেন, আমি মাত্র দায়িত্ব নিয়েছি। এখান থেকে ইনটারন্যাশনালকে বাঁচিয়ে রাখা যাবে কি না তা এখন বলা সম্ভব হচ্ছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম বলেন, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের অনিময়মের বিষয় যখন জানতে পেরেছি তখনই দুদক ও গোয়েন্দা সংস্থাকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট এ বিষয়ে একটা প্রতিবেদন দিয়েছে। পুরো প্রতিবেদন এখনো দেয়নি।
তিনি বলেন, খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাকে সুযোগ দেওয়া হলে তিনি ইন্টারন্যাশনাল লিজিংকে পুর্নগঠন করতে পারবেন।
আদালতে ইন্টারনাশনাল লিজিংয়ের পরিচালকদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
আদালত শুনানি শেষে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অবসায়ন করা হবে কি না, সে বিষয়ে আদেশের জন্য আগামীকাল দিন ধার্য করেন।
এর আগে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের (আইএলএফএসএল) স্বাধীন চেয়ারম্যান (হাইকোর্টের নির্দেশে নিয়োগপ্রাপ্ত) খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকের নিচে নয় এমন একজন কর্মকর্তাকে আসতে বলেন আপিল বিভাগ। ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের ব্যাস্তবিক পক্ষে অর্থনৈতিক অবস্থা কী রকম আছে, অবসায়ন হওয়ার মতো অবস্থায় আছে কি না, আর্থিক অনিয়ম হলে কোন পর্যায়ে আছে, অর্থনৈতিক অবস্থার বিষয়ে সামগ্রিক অবস্থা নিয়ে তাদের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি ওই কোম্পানির আমানতকারীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এক আদেশে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেড পরিচালনার জন্য স্বাধীন পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদকে নিয়োগ দেন। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান চেয়ারম্যান, এমডি, বহুল আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদারসহ (পি কে হালদার) ১৩ পরিচালকের ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দ করতে বলা হয়।
এছাড়া, প্রশান্ত কুমার হালদারের মা, স্ত্রী, ভাই প্রীতিশ কুমার হালদার, দুই কাজিন অমিতাভ অধিকারী ও অভিজিৎ অধিকারী, ব্যাংক এশিয়ার সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এরফানউদ্দিন আহমেদ এবং বন্ধু উজ্জল কুমার নন্দীর ব্যাংক হিসাব ও পাসপোর্ট জব্দ করার নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি ২০ জনের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
প্রশান্ত কুমার হালদার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে থেকে অন্তত সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।