রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একটি পরমাণু চুক্তি আছে। স্ট্র্যাটেজিক আর্মস রিডাকশন ট্রিটি (স্টার্ট) অনুযায়ী, দুই দেশ এক হাজার ৫৫০টির বেশি পরমাণু অস্ত্র রাখতে পারে না। ৫ ফেব্রুয়ারি এই অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
বাইডেন প্রশাসন এখন এই চুক্তির মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়াতে চায়। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এ কথা জানানো হয়েছে। হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি বলেছেন, বাইডেন অনেক দিন ধরেই বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থেই নতুন স্টার্ট চুক্তি করা দরকার। এখন এই চুক্তি করাটা আরও বেশি দরকার। কারণ রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এখন শত্রুতাপূর্ণ।
হোয়াইট হাউসের এই প্রেস সেক্রেটারি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে চায় বাইডেন প্রশাসন। বাইডেন ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের বলেছেন, রাশিয়া কোনোভাবে ২০২০-র প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রভাবিত করতে চেয়েছিল কিনা, তারা যেন তা খতিয়ে দেখেন। তা ছাড়া রাশিয়ায় পুতিনবিরোধী নেতা নাভালনিকে বিষ দিয়ে হত্যার চেষ্টা এবং আফগানিস্তানে মার্কিন সেনাদের নিয়ে রাশিয়ার উদ্যোগ বাইডেন প্রশাসন খুব ভালোভাবে দেখছে না। মুখপাত্র জানিয়েছেন, রাশিয়া যেন এ রকম বেপরোয়া ও যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী কাজ না করে।
স্টকহোম আন্তর্জাতিক শান্তি গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্যানুসারে রাশিয়ার কাছে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি আণবিক বোমা রয়েছে৷ দেশটিতে এ ধরনের বোমার সংখ্যা ৬,৩৭৫টি৷ ১৯৪৯ সালে রাশিয়া প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষা করেছিল৷
রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্টার্ট ওয়ান চুক্তি হয় ১৯৯১ সালে, যেটি কার্যকর হয় আরও তিন বছর পর। ওবামা প্রশাসনের সময় নিউ স্টার্ট চুক্তি সই করে দুদেশ। েএতে বলা হয়, দুদেশের পরমাণু স্থাপনা ১৫৫০ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। অন্যান্য বিধ্বংসী অস্ত্রও সীমিত থাকবে।
রাশিয়া অবশ্য পরমাণু চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য একাধিকবার আমেরিকাকে অনুরোধ জানিয়েছে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট থাকার সময় ট্রাম্প বারবার সেই অনুরোধ খারিজ করে দিয়েছেন। শেষের দিকে অবশ্য ট্রাম্প চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু রাশিয়া তখন ট্রাম্পের শর্ত মানতে রাজি হয়নি।
পেন্টাগনের প্রধান মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, 'এই চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ পর্যন্ত বাড়ালে দুই দেশই উপকৃত হবে। তখন পরমাণু অস্ত্রের মজুদ বাড়ানো হবে না। আমেরিকার ঝুঁকিও কমবে। সূত্র রয়টার্স ও আনাদোলু এজেন্সি।