ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাশেদুল হক গত মঙ্গলবার আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়ম চাপা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন কর্মকর্তাদের পাঁচ থেকে সাত লাখ টাকা করে দিত রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং।
আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক শাহ আলমকে প্রতি মাসে দেওয়া হতো দুই লাখ টাকা করে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনিয়ম-দুর্নীতি ‘ম্যানেজ’ করতেন সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী।
আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের প্রতিষ্ঠান থেকে ঘুষ গ্রহণ করার অভিযোগ আসার পর আজ কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সিদ্ধান্ত নেয়। আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগ-২–এর দায়িত্ব থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংক শাহ আলমকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগের আদেশে বলা হয়েছে, শাহ আলম এখন থেকে ফিন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি, ডিপোজিট ইন্স্যুরেন্স ও স্পেশাল স্টাডিজ বিভাগের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। আগে তিনি আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ, ব্যাংক পরিদর্শন-২ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। এখন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের নতুন নির্বাহী পরিচালক হুমায়ুন কবির।
১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদান করেন শাহ আলম। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দেখভালের দায়িত্বে থাকা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের মহাব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পান ২০১৩ সালের অক্টোবরে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তিনি নির্বাহী পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পান। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বেই ছিলেন। তাঁর মেয়াদেই দেশের কমপক্ষে ১০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের দুর্নীতি হয়। ফলে অর্ধেকই এখন টাকা ফেরত দিতে পারছে না। আর এসব দুর্নীতি মাঠে থেকে নেতৃত্ব দেন পি কে হালদার। এ সময়ে তিনি রিলায়েন্স ফাইন্যান্স ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের এমডি ছিলেন।