সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অনুষ্ঠিত ‘শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের বিশেষ কমিটি (সি-৩৪)’-এর সভায় প্রদত্ত বক্তব্যে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা একথা বলেন। জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে তথ্য জানা গেছে।
করোনার মধ্যেও অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন এবং স্বাগতিক দেশের করোনা অতিমারি মোকাবিলা কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা প্রদানের জন্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। শান্তিরক্ষা ব্যবস্থাপনায় ‘জরুরি প্রস্তুতি’ অত্যাবশ্যক করাসহ শান্তিরক্ষীদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বৃহত্তর আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি। শান্তিরক্ষীদের অগ্রাধিকারভিত্তিক কোভিড-১৯ এর টিকা প্রদানের বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।
আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার প্রতি ক্রমবর্ধমান বহুমাত্রিক ও বহুমুখী হুমকির কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, এহেন পরিস্থিতিতে শক্তিশালী শান্তিরক্ষা পদক্ষেপের কোনো বিকল্প নেই। ‘অ্যাকশান ফর পিসকিপিং এজেন্ডা (এফরপি)’সহ জাতিসংঘ গৃহীত সংস্কার কার্যক্রমসমূহের ধারাবাহিকতার জন্য ধন্যবাদ জানান তিনি। এফরপি -এর রিভিউকেও স্বাগত জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। মাঠপর্যায়ে কর্মরত শান্তিরক্ষীদের প্রেরিত তথ্য-পরামর্শগুলো জাতিসংঘের প্রধান নীতি ও দলিলসমূহে অন্তর্ভূক্ত করার জন্য নিয়মতান্ত্রিক প্রচেষ্টা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
শান্তিরক্ষীদের ওপর হামলার নিন্দা এবং এ সকল হামলার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। পারদর্শিতা প্রশ্নে প্রয়োজনীয় জনবল ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জামসহ কাজ করার অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। তিনি বলেন, ‘শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের দায়িত্বসমূহ অবশ্যই হতে হবে স্পষ্ট, বাস্তভিত্তিক এবং অর্জনযোগ্য; আর সেগুলো থাকবে সামর্থ্য, মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতা এবং সম্পদের যথাযথ সংস্থানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে টেকসই শান্তিরক্ষা কার্যক্রম নিশ্চিত করতে শান্তি প্রক্রিয়াকে অবশ্যই সুস্পষ্ট রাজনৈতিক সমাধানের পথে পরিচালিত করতে হবে। আর তা হবে সমন্বিত শান্তিরক্ষা ও শান্তি-বিনির্মাণ প্রচেষ্টা অনুযায়ী।’ এক্ষেত্রে তিনি শান্তিরক্ষা মিশনসমূহের সঙ্গে শান্তিবিনির্মাণ ও টেকসই শান্তি প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত সকল পক্ষের আরো বেশি সমন্বয়, সহযোগিতা ও অংশগ্রহণের ওপর জোর দেন।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেন। প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বিনির্মাণের মাধ্যমে শান্তিরক্ষায় নারী ভূমিকার বৈচিত্র বৃদ্ধি এবং তাদের কর্ম-উপযোগী পরিবেশ তৈরির জন্য সম্পদ বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বানও জানান তিনি। নারী শান্তি ও নিরাপত্তা বিষয়ক জাতীয় কর্ম-পরিকল্পনার উদাহরণ টেনে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বিভিন্নমূখী ভূমিকা ও নেতৃত্বশীল পদসহ সকল পর্যায়ে নারী শান্তিরক্ষী পদায়নে বাংলাদেশের সক্ষমতার কথা পূনর্ব্যক্ত করেন।