আজ বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ভবনে ‘স্টেকহোল্ডার (মিডিয়া) কনসালটেশন ওয়ার্কশপ’ শীর্ষক এক সেমিনারে এ তথ্য জানান পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে দুটি কাজ করেছি। একটা পরিকল্পনামন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব গণমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেছেন। কিন্তু আরেকটি বিষয় তুলে ধরা হয়নি। করা উচিত ছিল পরে আমার মনে হয়েছে।’
‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব স্যার আমাদের পরামর্শ দিয়েছিলেন। আমাদের পারসেপশন (ধারণা) এমন যে, করোনার সময় অন্যান্য অসুস্থতায় মানুষ কম মারা যাচ্ছে। করোনায় মানুষ মারা যাচ্ছে এবং অন্যান্য অসুখে কম যারা যাচ্ছে। কিন্তু এই সময় মানুষ ডাক্তারের কাছেও কম যাচ্ছে। করোনার সময় আমি প্রায় আড়াই মাস ফিল্ডে ছিলাম। ওখানে এই পারসেপশন সবার মধ্যেই ছিল। স্যার বলার পর আমাদের নতুন কোনো সার্ভে (জরিপ) করতে হয়নি। আমাদের চলমান যে সার্ভেগুলো আছে, সেগুলো থেকে তথ্য নিয়ে দেখলাম যে, আসলে আমাদের পারসেপশন সঠিক নয়।’
তিনি বলেন, ‘এর আগের বছরের ১০ মাস এবং এই অর্থবছরের ১০ মাস নিয়ে এই স্টাডি করেছিলাম। স্টাডিতে দেখা গেছে, (১০ মাসে) করোনায় পাঁচ হাজার ২০০ জনের মতো লোক মারা গেছেন। কিন্তু করোনার এই সময়ে শুধু হার্ট-অ্যাটাকে এবং হার্ট ফেইলিওর বা হার্টের অসুখে প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার মানুষ মারা গেছেন। করোনায় যত মানুষ মারা গেছেন, তার চেয়ে আত্মহত্যায় বেশি মারা গেছেন। এই সময়ে আত্মহত্যায় মারা গেছেন প্রায় ১১ হাজার মানুষ। আমরা শুধু করোনার পেছনেই দৌঁড়েছি। কিন্তু আমাদের অন্যান্য বিষয়েও যে ইন্টারফেয়ার (নজর দেয়া) দরকার, করোনার জন্য হয়তো সেগুলোতে গুরুত্ব দিচ্ছি না। সেসব ক্ষেত্রে আমরা যদি গুরুত্ব না দিই, তাহলে কিন্তু আমাদের অন্যান্য রোগী বেড়ে যাবে। এই তথ্যগুলো জানানো আমাদের বিবিএসের দায়িত্ব’—বলেন সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী।
এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) এক ভার্চুয়াল সভায় জানানো হয়, মার্চ ২০২০ থেকে নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন এক হাজার ৫৮ জন মানুষ। অন্যদিকে ২০১৯ সালের জুন থেকে ফেব্রুয়ারি ২০২০ এই নয় মাসে এ সংখ্যা ছিল ৯৪০ জন। অর্থাৎ করোনার নয় মাসে আত্মহত্যার হার ১৩ শতাংশ বেড়েছে।