মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে নগদ।
ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’-এ যুক্ত হওয়ার জন্য *১৬৭# ডায়াল করে পিন সেট করতে হয়। অ্যাপের মাধ্যমেও জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ভেরিফিকেশন করিয়ে গ্রাহকরা যেকোনো সময় ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট খুলতে পারছেন।
অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি ক্যাম্পেইন চালুর পর ‘নগদ’ প্ল্যাটফর্মে গ্রাহকদের ব্যাপক সাড়া মিলেছে। ‘নগদ’-এর অ্যাপ ডাউনলোডও এতটাই বেড়ে গেছে যে, গুগল প্লে স্টোরে ‘নগদ’ অ্যাপ এখন বাংলাদেশের মধ্যে টপ চার্টে অবস্থান করছে।
সম্প্রতি দেশের সব মোবাইল অপারেটরের সঙ্গে *১৬৭# ডায়ালের মাধ্যমে পিন সেট করে অ্যাকাউন্ট খোলার চুক্তি করে ‘নগদ’। এরপর থেকে ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট খোলার হিড়িক পড়েছে। মোবাইল ফোন অপারেটরদের কাছে যেহেতু গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্র আছে, সুতরাং *১৬৭# ডায়াল করে গ্রাহক তার আগ্রহের কথা জানানোর মুহূর্তেই জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেজে থেকে গ্রাহকের তথ্য ভেরিফিকেশন করিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া শেষ করা হচ্ছে। ‘নগদ’-এর উদ্ভাবিত এই প্রযুক্তি ইতিমধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাড়া ফেলেছে।
একসময় যেকোনো মোবাইল অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য মানুষকে ব্যাপক পরিশ্রম ও অর্থ খরচ করতে হতো। সেই সঙ্গে কয়েক দিন, এমনকি সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতো। এই ব্যবস্থা সহজ করতে ডাক বিভাগের ‘নগদ’ দেশে প্রথম ডিজিটাল কেওয়াইসির প্রচলন করে। এরপর বাংলাদেশ সরকারের ‘পরিচয়’ অ্যাপের মাধ্যমে এক মিনিটে ‘নগদ’ অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি চালু করে। সর্বশেষ *১৬৭# ডায়াল করে পিন সেট করলেই একজন ‘নগদ’ গ্রাহক হয়ে যেতে পারছেন মুহূর্তেই।
সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি এক দিনেই ‘নগদ’-এর প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হয়েছে এক লাখ ৮৫ হাজার গ্রাহক। তার আগে পরে কয়েক দিনও প্রায় একই হারে গ্রাহক বাড়ছে।
সরকারি ছুটির দিনগুলোতে সংখ্যা একটু কম হলেও গত দুই সপ্তাহে গড়ে প্রতিদিন দেড় লাখ নতুন গ্রাহক পেয়েছে ‘নগদ’। ফলে ‘নগদ’-এর কার্যকর গ্রাহক সংখ্যা এখন তিন কোটি ছাড়িয়ে গেছে, যা দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধিতে বড় ধরনের অগ্রগতি। প্রযুক্তি ব্যবহার করে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বৃদ্ধি করায় এরই মধ্যে ‘নগদ’-কে একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকেও পুরস্কৃত করা হয়েছে।
‘নগদ’-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক বলেন, শুরু থেকেই আমরা চেয়েছি খুব সহজে সারাদেশের মানুষের কাছে ‘নগদ’-কে পৌঁছে দিতে। এক্ষেত্রে এক দিকে আমরা যেমন খরচ কমিয়েছি, অন্যদিকে আবার প্রযুক্তির মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়াকে সহজীকরণ করেছি। আমাদের মূল চাওয়া আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে ‘নগদ’ দেশের মানুষকে এমন একটি প্ল্যাটফর্ম দেবে, যার মাধ্যমে তারা আর্থিক লেনদেনের স্বাধীনতা পাবে। ইতোমধ্যে আমরা আমাদের চেষ্টার ফল দেখতে শুরু করেছি। আশা করি অল্প সময়ের মধ্যে আমরা দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এমএফএস অপারেটর হিসেবে পরিণত হব।
গ্রাহক সংখ্যার বিবেচনায় বর্তমানে ‘নগদ’-এর মার্কেট শেয়ার ৩০ শতাংশ, যা চলতি বছরের মধ্যেই ৫০ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে অপারেটরটি। প্রযুক্তিগত সুবিধার পাশাপাশি ‘নগদ’-এ এখন চলছে দারুণ মোবাইল রিচার্জ অফার। ‘নগদ’ ওয়ালেট থেকে যেকোনো মোবাইল অপারেটরে ২০ টাকা রিচার্জ করলেই পাচ্ছেন ২০ টাকা বোনাস। এ ছাড়াও দেশের সর্বনিম্ন ক্যাশ আউট চার্জ, সেন্ড মানি ফ্রি, বিল পে ফ্রি এবং জমানো টাকার ওপর সবচেয়ে বেশি মুনাফা ও ঝামেলাহীন পেমেন্ট অফারসহ আরও অনেক কিছু পাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে সরকারি এই মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস অপারেটরটি।
এর বাইরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি এবং শিক্ষা উপকরণ ভাতা বিতরণ করা হচ্ছে ‘নগদ’-এর মাধ্যমে। চলতি বছর সব মিলে প্রাথমিক পর্যায়ের এক কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীকে ভাতা ও উপবৃত্তি দেবে সরকার। পাশাপাশি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ৭৫ শতাংশ ভাতা ‘নগদ’-এর মাধ্যমে বিতরণ করবে সরকার। একই সঙ্গে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের আর্থিক প্রণোদনাও ‘নগদ’-এর মাধ্যমে বিতরণ করছে সরকার।