নারী উদ্যোক্তাদের ৮১ শতাংশের নেই ব্যাংক হিসাব

নারী উদ্যোক্তাদের ৮১ শতাংশের নেই ব্যাংক হিসাব
দেশে নারী উদ্যোক্তাদের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে বাড়ছে নারীর কর্মসংস্থানও। তবে তাদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বেশকিছু প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে। তবে নারী উদ্যোক্তাদের ৮১ শতাংশেরই নেই ব্যাংক হিসাব। যে কারণে নারী উদ্যোক্তাদের সমস্যা সমাধানে ব্যাংকগুলোকে যেমন এগিয়ে আসা দরকার, তেমনি তাদের জন্য আলাদা প্রণোদনা প্যাকেজও জরুরি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রোববার (১৪ মার্চ) ‘মুজিব বর্ষে নারী উদ্যোক্তাদের অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক সেমিনারে এমন অভিমত ব্যক্ত করেন তারা।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২১ উদযাপন উপলক্ষে এ সেমিনারের আয়োজন করে এসএমই ফাউন্ডেশন। এতে সভাপতিত্ব করেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমান। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার ও শিল্প সচিব কেএম আলী আজম।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ। নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে এসএমই ফাউন্ডেশন পরিচালিত গবেষণার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশের প্রায় ৫৪ শতাংশ নারী শুধু নিজের চেষ্টা ও আগ্রহে উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছেন। তবে নারী উদ্যোক্তাদের ৮১ শতাংশের ব্যাংক হিসাব না থাকা প্রমাণ করে, তাদের ব্যবসা ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা উন্নয়নে নজর দেয়া প্রয়োজন।

তার মতে, নারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে ছয়টি বাধা রয়েছে। এগুলো হলো বড় অংকের ঋণ না পাওয়া, ব্যবসা সম্প্রসারণে প্রতিবন্ধকতা, পণ্য রফতানিতে বাধা, নতুন বাজার সম্পর্কে তথ্যের ঘাটতি, নারী উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের দক্ষতার অভাব এবং পরিবার ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানের দ্বিমুখী কাজের চাপ।

এ অবস্থায় নারী উদ্যোক্তাদের বর্তমান সংকট মোকাবেলায় ব্যাংকগুলোকে এগিয়ে আসা দরকার বলে মনে করেন ড. নাজনীন আহমেদ। এছাড়া তাদের উন্নয়নে আলাদা প্রণোদনা প্যাকেজ দেয়া, এসএমই ফাউন্ডেশন ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে বিশেষ ঋণ কর্মসূচি চালু, পণ্যের বাজারজাতে ডিজিটাল প্লাটফর্ম তৈরিসহ বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরেন তিনি।

এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সরকারের উন্নয়ন রূপকল্পকে এগিয়ে নিতে নারী উদ্যোক্তাদের সব ধরনের সহায়তা দেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন শিল্পমন্ত্রী। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে ২৮ শতাংশ নারী উদ্যোক্তাকে সামাজিক প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করতে হয়েছে। তবে বর্তমানে তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে করদাতার হারও এ সময়ে ১০ শতাংশ থেকে ৫৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। পাশাপাশি স্নাতক পাস শিক্ষিত নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা বেড়েছে। বেড়েছে পারিবারিকভাবে নারীদের উদ্যোক্তা হতে উৎসাহিত করার হারও।

তিনি আরও বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিসিকে প্লট দেয়া হবে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিসিক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে নারী উদ্যোক্তাদের উৎপাদিত পণ্যের বাজারজাতের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নারী শ্রমিকদের আন্তরিক ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ তৈরি পোশাক খাতে দ্রুত অগ্রসর হয়েছে উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, দেশ উন্নয়নশীল হওয়ায় আমাদের সুযোগ-সুবিধা কমেনি বরং বেড়েছে। তবে আমাদের দায়িত্বও বেড়েছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে শিল্পায়নে নারীদের অংশগ্রহণ আরো বাড়াতে হবে।

এসএমই ফাউন্ডেশনের মহাব্যবস্থাপক ফারজানা খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান। নির্ধারিত বিষয়ের ওপর আলোচনা করেন চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বার সভাপতি মনোয়ারা হাকিম আলী ও জয়িতা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরোজা খান।

আর্কাইভ থেকে

আরও পড়ুন

পোশাকখাতে উৎপাদন খরচ বেড়েছে, কমে গেছে চাহিদা
২০২৩ সালে স্বর্ণের দাম বেড়েছে ১৩ শতাংশ
২০২৩ সালে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে ১০ শতাংশ
ইভ্যালিতে বড় অফার আজ, ১০ টাকায় মিলবে পাঞ্জাবি
হিলিতে আদা-সবজিতে স্বস্তি, বাড়তি দামে রসুন
বাংলাদেশে বিনিয়োগের ঐক্যমতে শেষ হলো গ্লোবাল বিজনেস কনফারেন্স
১১ মাসে ৪৩ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রফতানি
২০২৪ সালে ৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ পাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর
আইসিএবির নতুন সভাপতি ফোরকান উদ্দীণ
বিসিক শিল্পনগরীতে এক হাজার ৯৮ প্লট খালি