কারাগারের রোজনামচায় তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমার বাড়িতে মুড়ি খাবার অভ্যাস।’ রোজনামচারই অন্যত্র লিখেছেন, ‘আমার মুড়ি জেলখানায় খুব জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। সিপাহি, জমাদার ও কয়েদিদের মধ্যে অনেকে পালিয়ে মুড়ি খেতে আসে।’
আরও কয়েক জায়গায় আছে বঙ্গবন্ধুর মুড়িবন্দনা। খাবারটির বড় ভক্ত ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তার লেখা পড়ে তেমনই ধারণা পাওয়া যায়।
মাছের মধ্যে প্রিয় ছিল ‘কই’। ‘কারাগারের রোজনামচা’য় লিখেছেন, ‘রেণু কিছু খাবার দিয়ে গেছে। কই মাছ খেতে ভালোবাসতাম, তাই ভেজে দিয়ে গেছে।’
জেলে থাকতে থাকতে রান্নায়ও পারদর্শী হয়ে ওঠেন বঙ্গবন্ধু। মাঝেমধ্যেই বাবুর্চিকে সরিয়ে নিজেই রান্নায় বসে যেতেন। রান্না করতে পারতেন পটোল ভাজি, ইলিশ মাছ।
আবার রেসিপি না জানায় নানা সময় কলিজা, ফলি মাছ, খিচুড়ি রাঁধতে গিয়ে কী রকম নাকাল হয়েছেন, রোজনামচায় মজার ছলে সেসব বিষয়েরও বর্ণনা আছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভাতের সঙ্গে ছাঁটা ডাল খেতে পছন্দ করতেন। মুগ ডাল ঘিয়ে ভেজে তৈরি হতো ছাঁটা ডাল। আর সেই খাবার নিজ হাতে রান্না করে পরিবেশন করতেন তার শাশুড়ি।
স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর প্রিয় ছিল গাইবান্ধার রসমঞ্জুরী। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকেও তা উপহার দিয়েছিলেন। ইন্দিরা গান্ধী খেয়ে প্রশংসা করেছিলেন।
‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ বইয়ের ২৭ নম্বর পৃষ্ঠায় শেখ হাসিনা লিখেছেন, ‘আমার আব্বা ছিল বেশ রোগা। তাই আমার দাদি সবসময় ব্যস্ত থাকতেন কিভাবে তার খোকার শরীর ভালো করা যায়। তাই দুধ, ছানা, মাখন ঘরেই তৈরি হতো। বাগানের ফল, নদীর তাজা মাছ সবসময় খোকার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত থাকত।’
বঙ্গবন্ধুর প্রিয় খাবার সম্পর্কে শেখ হাসিনা এই বইয়ে লিখেছেন, ‘খাবার বেলায় খুব সাধারণ ভাত, মাছের ঝোল, সবজিই তিনি পছন্দ করতেন। খাবার শেষে দুধ-ভাত-কলা ও গুড় খুব পছন্দ করতেন। স্কুল থেকে ফিরে দুধ-ভাত খাবার অভ্যাস ছিল এবং সকলকে নিয়েই তিনি খাবার খেতেন।’