বর্তমানে ট্রাম্প তার আর্থিক বিষয় ও পারিবারিক ব্যবসা নিয়ে অপরাধমূলক তদন্তের মুখে রয়েছেন। ব্লুমবার্গ মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে এবং তার পরে ট্রাম্পের সম্পদ গণনা করতে ২০১৬ সালের মে থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত আর্থিক নথি ও অন্যান্য নথি বিশ্লেষণ করেছে। তার মোট সম্পদের প্রায় তিন-চতুর্থাংশই বাণিজ্যিক আবাসন খাতে।
করোনার কারণে বাড়ি থেকে কাজ করার বিষয়টি ত্বরান্বিত হওয়ায় ট্রাম্পের নিজ ও সহমালিকানাধীন অফিস টাওয়ারগুলোর চাহিদা ও মূল্য হ্রাস পেয়েছে। আর এটি এমন একটি প্রবণতা, যা দীর্ঘমেয়াদে স্থায়ী হতে পারে। ব্লুমবার্গের অনুমান অনুযায়ী, ট্রাম্পের মূল বাণিজ্যিক সম্পত্তি ২৬ শতাংশ কমে গেছে। প্রায় এক ডজন হোটেল ও রিসোর্টের পাশাপাশি ১৯টি গলফ কোর্স তার মালিকানাধীন, পরিচালনা কিংবা তার নামে লাইসেন্স করা রয়েছে। যদিও সামাজিক দূরত্ব মেনে বাইরের পরিবেশের ক্রীড়া হিসেবে মহামারীকালেও গলফ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। নথি অনুযায়ী, ট্রাম্প তার দুটি গলফ কোর্স থেকে ধারাবাহিকভাবে অর্থ হারিয়েছেন।
গত জানুয়ারিতে ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গার পর দেশটির প্রফেশনাল গলফার্স অ্যাসোসিয়েশন (পিজিএ) ট্রাম্পের নিউ জার্সি গলফ কোর্সে ২০২০ সালের চ্যাম্পিয়নশিপ টুর্নামেন্ট আয়োজনের একটি চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসেছে। পিজিএ যুক্তি দিয়েছিল, এ কারণে তাদের গ্রুপের ব্র্যান্ড ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নব্বইয়ের দশকে দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার পর ঋণ দিতে রাজি হওয়া একমাত্র ডয়েচে ব্যাংকও দাঙ্গার পর ট্রাম্পের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দেয়।
সদ্য সাবেক এ মার্কিন প্রেসিডেন্ট একটি বোয়িং ৭৫৭-সহ উড়োজাহাজ বহরেরও মালিক। ব্লুমবার্গের দেয়া আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী, উড়োজাহাজগুলো কয়েক দশক পুরনো এবং এগুলোর মূল্য কমে গেছে। ২০১৫ সালে সাতটি উড়োজাহাজের মূল্য ছিল প্রায় ৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এর মধ্যে পাঁচটির মূল্য ২০২০ সালে ৬৫ লাখ ডলারে নেমেছে। কয়েক বছর ধরেই ট্রাম্পের উড়োজাহাজগুলোর মূল্য হ্রাস পাচ্ছিল। পাশাপাশি বহরের কয়েকটি উড়োজাহাজ তিনি বিক্রি করে দেয়ায় এ খাতে তার সম্পদমূল্য কমে গেছে।
প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ট্রাম্পের সম্পদ নিয়মিত আলোচনায় ছিল এবং তিনি কী পরিমাণ কর দেন, তা নিয়ে তিনি খুব গোপনীয় ছিলেন। গত মাসে সুপ্রিম কোর্ট তার আয়কর বিবরণী এবং অন্যান্য আর্থিক রেকর্ড নিউইয়র্কের প্রসিকিউটরদের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কয়েক মাস ধরে তারা ট্রাম্পের আট বছরের ব্যক্তিগত ও করপোরেট কর বিবরণী সংগ্রহের চেষ্টা করছেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট তার কিছু সম্পদ যেমন প্রেসিডেন্ট-পরবর্তী স্মৃতিকথার বইয়ের জন্য লোভনীয় মিডিয়া চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে পারেন। বারাক ও মিশেল ওবামা তাদের স্মৃতিকথার জন্য প্রায় ৬ কোটি ৫০ লাখ ডলার পেয়েছিলেন। সূত্র: বিবিসি।