বসন্তের অর্ধেক শেষ হলেও মুকুলে মুকুলে ছেয়ে গেছে বাগানের লিচু গাছগুলো। চারদিকে মুকুলে থাকা মধুর ঘ্রাণে স্বর্গীয় পরিবেশ তৈরি হয়েছে। কৃষকের পরিচর্যার সাথে লিচুর বাগানে মৌয়ালদের ব্যস্ততাও বেড়েছে।
জানা গেছে, গাজীপুরের শ্রীপুরের টেপিরবাড়ী, কেওয়া, বারতোপা ও রাজাবাড়ী এলাকায় ৭২৭ হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান গড়ে উঠেছে। চলতি বছর লিচুর সম্ভাব্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩৮৯০ মেট্রিক টন। এছাড়াও লিচুর মুকুল থেকে মধু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩.০৭ টন। লিচুর মুকুলের এই ভরা মৌসুমে প্রাকৃতিকভাবে মধু উৎপাদনের দিকেই নজর সবার বেশি।
শ্রীপুর উপজেলা মৌচাষি কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, সরকার থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে শ্রীপুরে প্রায় অর্ধশত চাষি বিভিন্ন মৌসুমী ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে থাকে। মধু সংগ্রহের এ পক্রিয়ায় সরাসরি যুক্ত রয়েছে প্রায় দুইশতাধিক চাষি। প্রতিবছর তাদের মূল লক্ষ্য থাকে লিচুর এই মৌসুম। কেননা লিচু ফুলের এই মধু দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। গত বছর করোনার কবলে পড়ে মধু সংগ্রহে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় ক্ষতি কিছুটা কাটিয়ে ওঠা যাবে।
মৌচাষি আজিজুল হক বলেন, তারা অনেকটা যাযাবরের মতো জীবন যাপন করেন। মৌসুম অনুযায়ী মৌমাছির ফ্রেমসহ চাকগুলো বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যেতে হয়। তবে সকল কিছুর থেকে লিচুর ফুল থেকে মধু উৎপাদিত হয় বেশি। লিচু গাছে মুকুল আসার পর বাগান মালিকের অনুমতি সাপেক্ষে বাগানে তা স্থাপন করা হয়। পরে একমাস ধরে দু-চারদিন পর পর মধু সংগ্রহ করা হয়। সরাসরি উৎপাদিত এই মধু বাগান থেকেই পাইকারদের হাতে তুলে দেয়া হয়। বর্তমানে প্রতি কেজি মধু বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০টাকা দরে। আবহাওয়া ভালো থাকলে আরো ১৫ দিন মধু উৎপাদন করা যাবে।