সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান ড. টেড্রস আধানম গেব্রেইয়েসুস জেনেভায় সংস্থাটির সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ভাইরাসটি ইতোমধ্যে অনেক দেশেই পা রেখেছে। এটি প্যানডেমিকে (মহামারির চেয়ে বড় সংকট) পরিণত হওয়ার হুমকি এখন সত্য হতে চলেছে।’
তিনি বলেন, ‘অল্প কিছু দেশ সম্প্রদায়ভিত্তিক সংক্রমণ আটকাতে সক্ষম হয়েছে। তবে, এ নিয়ে বিশ্ব নেতাদের এখনই হাল ছেড়ে দেয়ার দরকার নেই। চীনে ৮০ হাজারের বেশি করোনা রোগীর ৭০ শতাংশই সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।’ দেশটিতে মহামারি প্রায় শেষের পথে বলেও মন্তব্য করেন ডব্লিউএইচও’র মহাপরিচালক।
এদিকে, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় উদ্বেগ জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তারা। সংস্থাটির জরুরি কর্মসূচির নির্বাহী পরিচালক ড. মাইক রায়ান বলেন, ‘যখন কোনও কিছু (করোনাভাইরাস) ১০০টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে, আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ছাড়ায়, তখন চিন্তা তো হবেই। মাত্র দুই সপ্তাহ আগেও এটি ৩০টি দেশে ছিল।’
ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি ও ইরান- এই চারটি দেশেই করোনা আক্রান্ত ৯৩ শতাংশ রোগী রয়েছেন। ৮০টি দেশে আক্রান্তের সংখ্যা একশ’রও নিচে। এছাড়া, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে মাত্র ২০ শতাংশের শরীরে গুরুতর উপসর্গ দেখা গেছে, বাকি ৮০ শতাংশের শরীরেই বড়জোর হালকা নিউমোনিয়া দেখা গেছে।
সংস্থাটির কর্মকর্তাদের মতে, হৃদরোগ, শ্বাসকষ্ট, ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। চীনে ৮০ বছর বয়োসোর্ধ্বদের করোনায় মৃত্যুর হার প্রায় ২০ শতাংশ।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহানে প্রথমবার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য অঞ্চলে। এ পর্যন্ত বিশ্বের অন্তত ১১৫টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। এতে মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ২৭ জনের, আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৪২২ জন। এর মধ্যে ৬৪ হাজার ৮১ জন সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন।