চার বছর আগে উদ্যোগ নেওয়া হলেও ওই চুক্তির বিষয়টি এতদিন আটকে ছিল। শনিবার দুই দেশের শীর্ষ বৈঠকে এ বিষয়ে নতুন করে ঐকমত্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
এদিন সকালে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে দুই দেশের প্রতিনিধি দলের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে নিজ নিজ দেশের নেতৃত্ব দেন।
বিকালে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকের নানা দিক তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
তিনি বলেন, “আমরা বলেছি, আমরা ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্টে রাজি। তবে এই মুহূর্তে যদি এফটিএ করতে সময় লাগে, তাহলে আমরা অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তিতে (পিটিএ) যেতেও রাজি আছি। তারা এটা গ্রহণ করেছে।”
”আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের অনেক সুযোগ রয়েছে, এটার ফ্রেমওয়ার্কটা হতে পারে, যদি আমরা এফটিএ বা পিটিএ করি।”
এর আগে ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার সফরে এফটিএ চুক্তি সই করতে সম্মত হয়েছিল উভয় দেশ। কিন্তু শ্রীলঙ্কায় রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে শেষ পর্যন্ত তা সই হয়নি।
সেই প্রসঙ্গ ধরে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমরা আমাদের থেকে মোটামুটি ক্লিয়ার করে দিয়েছি এবং ওখানে আটকে আছে। তারা একটু ধীরে যাচ্ছে।”
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, “আমরা ২০১৭ সালে এই ঘোষণা দেওয়ার পরপরই শ্রীলঙ্কার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে অনেক পরিবর্তন শুরু হয় এবং এটি একবারে হয়নি, ধাপে ধাপে হয়েছে। পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে এগুলো সব সরকারের পক্ষে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না।“
“এবার আমরা বলেছি, উন্নয়নশীল রাষ্ট্র এবং ২০৪১ সালে উন্নত রাষ্ট্রে যেতে হলে বাণিজ্যে জিএসপি উঠে যাওয়ার পর এফটিএ একটি টুল। সেজন্য আমাদের আঞ্চলিক ও অন্যান্য দেশের সাথে এফটিএ করা আমাদের অগ্রাধিকার তালিকার একটি।”
তিনি বলেন, “আজকে যেটা আলোচনা হয়েছে এবং সম্মতি হয়েছে, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে হলে সময় লাগে। সেখানে যদি কালক্ষেপণ হয়, তাহলে আমরা সম্মত হয়েছি, এটার আলোচনা চলবে আরও বিস্তারিত। এর মাঝে আমরা পিটিএ করব।
‘‘তার মানে বাস্তবতাটিকে মেনে নিয়েই লম্বা সময় না নিয়ে অন্তর্বতী একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়, পিটিএ নিয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে এবং দু’দেশের নীতিগত সম্মতি হয়েছে।”
ফার্মাসিউটিক্যালস খাতে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে সহযোগিতা সম্প্রসারণের সিদ্ধান্ত বৈঠকে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ থেকে সাশ্রয়ী মূল্যে গুণগত মানসম্পন্ন ওষুধপণ্য অধিক পরিমাণে আমদানির জন্য শ্রীলঙ্কার প্রতি আহ্ববান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।”
সেইসঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন সম্ভাবনাময় খাতে শ্রীলঙ্কা থেকে বর্ধিত বিনিয়োগেরও আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।