সোমবার (২৯ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস ডিপার্টমেন্ট ‘স্টার্ট-আপ ফান্ড’ গঠনসহ সার্বিক বিষয়ে নীতিমালা জারি করেছে। নতুন উদ্যোক্তা তৈরি এবং স্ব-কর্মসংস্থান উৎসাহিত করতে ‘স্টার্ট-আপ ফান্ড’ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে নীতিমালা বলা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পুনঃঅর্থায়ন তলবিলের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকা হলেও ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে বাড়ানো হবে। এ তহবিলের মেয়াদ হবে ৫ বছর যা আবর্তনযোগ্য। প্রয়োজনে মেয়াদ আরও বৃদ্ধি করা হবে। দেশের সকল তফসিলি ব্যাংক এ তহবিল হতে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা গ্রহণের যোগ্য বলে বিবেচিত হবে। পুনঃঅর্থায়ন গ্রহণে আগ্রহী ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস্ ডিপার্টমেন্ট এর সাথে অংশগ্রহণ চুক্তি করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, আবেদনকারী নতুন উদ্যোক্তাকে সরকারি কিংবা যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত বেসরকারি উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান হতে উদ্যোক্তা উন্নয়ন, ব্যবসা পরিচালনা, বাজারজাতকরণ ইত্যাদি বিষয়ে অথবা অন্যান্য কারিগরি বিষয় (পণ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, যন্ত্রপাতি মেরামত ইত্যাদি)-এ সাফল্যজনকভাবে প্রশিক্ষণ গ্রহণের সার্টিফিকেট থাকতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক কারিগরি শিক্ষা না থাকলে উদ্যোক্তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যথাযথ বাস্তব ভিত্তিক জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও নতুন উদ্যোগ পরিচালনার সক্ষমতা থাকতে হবে।
ঋণ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত গ্যারান্টি অথবা শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ অথবা কারিগরি প্রশিক্ষণের সনদকে জামানত হিসেবে বিবেচনা করা যাবে। ব্যক্তিগত গ্যারান্টি বলতে ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান ও ঋণগ্রহীতার মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির আওতায় গৃহীত ঋণের আদায় সুরক্ষার লক্ষ্যে উভয় পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য কোনো ব্যক্তির অঙ্গীকারনামাকে বুঝাবে। তবে, দু’জনের অধিক ব্যক্তিগত গ্যারান্টিকে বাধ্যতামূলক করা যাবে না। ডিগ্রিধারী উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার মূল সনদ অথবা কারিগরি প্রশিক্ষণের মূল সনদ জামানত হিসেবে ব্যাংকে জমা রাখতে হবে।
সম্পূর্ণ নতুন ও সৃজনশীল উদ্যোগের জন্য ২১ থেকে ৪৫ বছর বয়সী যে কোনো উদ্যোক্তা এ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ এক কোটি টাকা ঋণ নিতে পারবেন। ঋণ খেলাপি কোনো উদ্যোক্তা ঋণ পাবেন না।
প্রজ্ঞাপনে তফসিলি ব্যাংকসমূহ কর্তৃক ‘স্টার্ট-আপ ফান্ড’ গঠন সংক্রান্ত নীতিমালায় বলা হয়, ব্যাংকসমূহ ২০২১ সাল হতে পরবর্তী ৫ বছর সময়ে প্রতি বছর তাদের পরিচালন মুনাফা (নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুযায়ী) হতে এক শতাংশ হারে অর্থ ‘স্টার্ট-আপ’ উদ্যোক্তাদের অনুকূলে বিতরণের লক্ষ্যে তহবিল হিসেবে সংরক্ষণ করবে। ২০২০ সালের ডিসেম্বর ভিত্তিক বাৎসরিক হিসাব চূড়ান্তকালে পরিচালন মুনাফা হতে বাধ্যতামূলকভাবে উক্ত এক শতাংশ তহবিল স্থানান্তর শুরু করতে হবে।
২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকসমূহ স্ব-স্ব ‘স্টার্ট-আপ ফান্ড’ হতে ঋণ বা বিনিয়োগ বিতরণের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের আওতায় ঋণ বা বিনিয়োগ প্রদান করতে পারবে বলেও প্রজ্ঞাপণে উল্লেখ করা হয়। তবে ২০২২ সালের জানুয়ারি হতে স্ব-স্ব ব্যাংকের ‘স্টার্ট-আপ ফান্ড’ এ রক্ষিত স্থিতি হতে ঋণ বা বিনিয়োগ প্রদান করার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃঅর্থায়ন সুবিধার আওতায় ঋণ প্রদান করা যাবে।
এ তহবিলের আওতায় প্রত্যেক ব্যাংক কর্তৃক প্রদেয় ঋণ বা বিনিয়োগের মধ্যে ন্যূনতম ১০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তাদের অনুকূলে বিতরণ করতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।