ইতালির বেসামরিক সুরক্ষা বিভাগ বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, একদিনে দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে দুই হাজার ৬৫১ জন। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ১১৩ জনে।
উৎপত্তিস্থল চীনে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও এই মুহূর্তে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে ইতালিতে। চীনের বাইরে সর্বোচ্চ আক্রান্ত এবং মৃত্যুর ঘটনা এখন ইতালিতে। দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের অন্তত আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে প্রাণঘাতী করোনা দেশজুড়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ায় এর মোকাবিলায় আরও কঠোর হয়েছে ইতালি সরকার। সর্বোচ্চ ২১ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রেখে নতুন আদেশ জারি করা হয়েছে। এতে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে অস্বীকৃতি জানানোকে ‘বিদ্বেষপ্রসূত হত্যার’ সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে।
ইতালির সরকার করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে একের পর এক পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে দেশটির উত্তরাঞ্চলে এ ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় দেশটির লম্বারদিয়া অঞ্চলসহ ১৪ প্রদেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছে প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কোন্তি।
আগামী ২৫ মার্চ পর্যন্ত দুই সপ্তাহের জন্য অফিস, আদালতসহ সবধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তবে ফার্মেসি, খাবার সরবরাহ, ব্যাংক, পোস্ট অফিস, সংবাদপত্র বিক্রয়, পেট্রোল পাম্প ইত্যাদি সেবা এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে রয়েছে।
করোনায় রোমের কলোসিয়াম, ফোনতানা ত্রেভিসহ দর্শনীয় স্থানগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গোটা ইতালির জনগণ এখন বন্দি জীবনবাস করছে। সুপার মার্কেটগুলোতে একসঙ্গে সবাইকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলছে সরকার ঘোষিত প্রতিষ্ঠান। যানবাহনও আগের মতো চলাচল করছে না। বেড়ে গেছে যাত্রী দুর্ভোগ।
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে সন্দেহভাজন করোনা আক্রান্ত রোগীকে বাড়িতে অবস্থান করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ নির্দেশ অমান্য করা হলে ২০৬ ইউরো জরিমানা গুনতে হবে। তবে তাদের দ্বারা অপর কেউ সংক্রমিত হলে কঠিন মূল্য দিতে হবে। এ জন্য সর্বোচ্চ ২১ বছর জেল হতে পারে অমান্যকারীর।
করোনা রুখতে ইতালি সরকারের জারি করা এই শাস্তিকে এইচআইভি-এইডস রোগ ছড়ানোর অপরাধের শাস্তির সঙ্গে তুলনা করেছে দেশটির মিডিয়া। এর আগে ২০১৭ সালে রোমে অনিরাপদ শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের অপরাধে এক ব্যক্তির ২৪ বছরের কারাদণ্ড দেয় দেশটির সরকার।